বিড়ালের কেরামতি

বিড়ালের কেরামতি

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
বিড়ালের কেরামতি

আমাদের বাড়ির চারপাশে সাদা-কালো-হলদে-বাদামি কত রকমের বিড়াল ঘোরাফেরা করে। আমাদের মতো মাছে-ভাতে বাঙালিদের অনেকের বাড়িতেই আবার পোষ্য হিসেবেও জায়গা করে নেয় বিড়াল। এই বিড়ালদের আমরা সচরাচর দেখে থাকি ছোটো ছোটো জায়গা দিয়ে গলে বেরিয়ে যেতে। অনেকে আবার ঠাট্টা তামাশা করে বলেন বিড়াল নাকি তরলের মতো। বিষয়টি কৌতুকের হলেও প্রশ্নটা থেকেই যায়। কীভাবে এই বিড়ালেরা ছোটো ফাঁক ফোকর দিয়ে গলে যায়? বিজ্ঞানীদের মতে বিড়ালের এই ক্ষমতার চাবিকাঠি রয়েছে তাদের কাঁধের অঞ্চলের হাড়ে। মানুষের শরীরে কাঁধের হাড়ের মধ্যে রয়েছে স্ক্যাপুলা বা সোল্ডার ব্লেড এবং ক্ল্যাভিকল বা কলারবোন। মানুষের মধ্যে স্ক্যাপুলা এবং ক্ল্যাভিকল একসাথে সংযুক্ত থাকে। ফলস্বরূপ এটি হাতের পেশিকে সহায়তা করে, তার ভার বহন করে। অন্যদিকে বিড়ালের শরীরে কাঁধের অঞ্চলের হাড় বা সোল্ডার ব্লেড শুধুমাত্র পেশির মাধ্যমে শরীরের বাকি অংশের সাথে সংযুক্ত থাকে। বিড়ালের কলারবোনের ক্ষেত্রেও একই কথা সত্য। তাছাড়াও, বিড়ালের কলারবোন তাদের শরীরের অন্যান্য অংশের তুলনায় অনেক ছোটো। বিড়ালের কাঁধের এই গঠন ও বৈশিষ্ট্য তাদের ছোটো জায়গায় নিজেদের আঁটাতে সাহায্য করে। বিবর্তনীয় এই বৈশিষ্ট্য বিড়ালকে ছোটো ছোটো ইঁদুর শিকার করতে, লুকিয়ে থাকতে বা শিকারীদের নাগাল থেকে পালিয়ে বাঁচতে সাহায্য করে। এছাড়াও, বিড়ালদের গোঁফ বা হুইস্কার তাদের ফাঁক ফোকর দিয়ে যেতে সাহায্য করে। বিড়ালের গোঁফ তাদের শরীরের লোমের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ পুরু এবং ত্বকের গভীরে তিনগুণ ঢুকে থাকে। প্রতিটি হুইস্কারের নীচের অংশে অনেক স্নায়ু প্রান্ত থাকে যা বিড়ালদের অত্যন্ত সংবেদনশীল করে তোলে আর তাদের আশেপাশ সম্পর্কে প্রচুর পরিমাণে তথ্য সরবরাহ করে। আর এই বৈশিষ্ট্যের সাহায্যে বিড়াল ছোটো জায়গার আকার বিচার করে তারপর সেই জায়গা দিয়ে গলে যাওয়ার চেষ্টা করে।