বিশাল প্রাচীন সমুদ্রের চিহ্ন মিলল মঙ্গলগ্রহে

বিশাল প্রাচীন সমুদ্রের চিহ্ন মিলল মঙ্গলগ্রহে

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৬ মার্চ, ২০২৩

মঙ্গলগ্রহের শুকনো, ধুলোময় রূপ দেখেই আমরা অভ্যস্ত। কিন্তু সাড়ে তিন বিলিয়ন বছর আগে মঙ্গলের মাটিতে যে বিস্তীর্ণ সমুদ্রের উপস্থিতি ছিল তার প্রমাণ পেয়েছেন গবেষকরা। হাজার হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ঢেউ তুলে বেঁচে ছিল সেই মহাসমুদ্র।
বর্তমানে সমুদ্রের না থাকলেও তার চিহ্ন রয়ে গেছে। সেগুলোকে ফ্লুভিয়াল রিজেস বলে। এমন ৬৫০০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ফ্লুভিয়াল রিজের সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এই টানাটানা লম্বা দাগগুলো আপাতভাবে নদীর স্রোতের দ্বারা সৃষ্টি হয়েছিল বলে মনে হতে পারে। হয়তো নদীর বদ্বীপ অঞ্চলগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছিল এই রিজেস।
পেনসিলভানিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির বেঞ্জামিন কার্ডেনাস বলছেন, মঙ্গলগ্রহের স্ট্র্যাটিগ্রাফি আর নদীখাতে থিতিয়ে পড়া উপাদান নিয়েই মূলত এই গবেষণাপত্র। উনি আরও ব্যাখ্যা করছেন, পৃথিবীতে জলস্রোতের ইতিহাস জানতে গেলে প্রথমেই জরুরি হল ঐ স্রোত এতদিন ধরে ঠিক কোন কোন উপাদান জমা করে রেখেছে নদীবক্ষে। সেটাকেই স্ট্র্যাটিগ্রাফি বলে। কীভাবে সেই বিবিধ উপাদান জমা হয় তাতে জমির চরিত্রও ধীরে ধীরে বদলে যায়। সেই পদ্ধতিই প্রয়োগ করা হয়েছে মঙ্গলগ্রহে।
২০০৭ সালে মার্স রিকনাইসেন্স অরবিটার যেসব তথ্য সংগ্রহ করেছিল সেগুলো ব্যবহার করেই গবেষকরা মঙ্গলের মাটিতে রিজের বেধ, কৌণিক পরিমাপ আর অবস্থান নির্ণয় করেছেন। যে নিচু অঞ্চল নিয়ে গবেষণা চলছে সেটাকে এওলিস ডোর্সা বলা হয়। কার্ডেনাসের মতে, মঙ্গলের এই অংশে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ঘটেছে। যখন মহাসাগর ছিল তখন সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতাও বেড়েছিল। নদী আর সমুদ্রের প্রবাহে পাথরের মধ্যে নড়াচড়াও ছিল প্রবল।
জার্নাল অফ জিওফিজিক্যাল রিসার্চ আর নেচার জিওসায়েন্স এই দুই পত্রিকাতেই প্রকাশিত হয়েছে গবেষণাপত্রটা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

15 + 20 =