বিশ্বব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ভয়ের কারণ মাটিতে পটাশিয়ামের ঘাটতি

বিশ্বব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ভয়ের কারণ মাটিতে পটাশিয়ামের ঘাটতি

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

মাটিতে কৃষিকাজের জন্য পটাশিয়ামের ঘাটতি বহুলাংশে অস্বীকৃত হলেও বিশ্বব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তার ক্ষেত্রে একটি সম্ভাব্য হুমকির কারণ। এই সমস্যার যদি কোনো সুরাহা না করা হয় তবে বিপদ বাড়তে পারে। এমন সংকেতই দিয়েছেন ইউনিভার্সিটি অফ এডিনবার্গ এবং ইউকে সেন্টার ফর ইকোলজি অ্যান্ড হাইড্রোলজির গবেষক দল। নেচার ফুডে প্রকাশিত এই সমীক্ষায় দেখা গেছে যে বিশ্বের অনেক অঞ্চলে কৃষিজ মাটিতে যত বেশি পটাশিয়াম যোগ করা হচ্ছে তার চেয়ে বেশি পটাশিয়াম অপসারণ করা হচ্ছে। কীভাবে সমস্যাটির সমাধান করা যায় তার জন্য একাধিক সুপারিশও দেওয়া হয়েছে।
উদ্ভিদের বৃদ্ধির জন্য একটি অত্যাবশ্যক পুষ্টি উপাদান হল পটাশিয়াম। এই রাসায়নিক উপাদান সালোকসংশ্লেষণ এবং শ্বাস-প্রশ্বাসে সাহায্য করে, এবং পটাশিয়ামের অভাবে উদ্ভিদের বৃদ্ধি বাধাপ্রাপ্ত হয় এবং ফসলের ফলনও হ্রাস পায়। কৃষকরা প্রায়ই তাদের ক্ষেতে পটাশিয়াম-সমৃদ্ধ সার ছড়িয়ে দিয়ে ক্ষয়প্রাপ্ত পুষ্টি পূরণ করার চেষ্টা করে। অনেক সময় সারের সরবরাহের অপ্রতুলতা বাধার কারণ হয়ে দাঁড়ায়, তাছাড়াও সারের পরিবেশগত প্রভাব সম্পর্কে দীর্ঘস্থায়ী প্রশ্ন রয়েই গেছে। গবেষকরা রিপোর্ট করেছেন যে বিশ্বব্যাপী, প্রায় ২০% ক্ষেত্রে কৃষিজ মৃত্তিকা পটাশিয়ামের ঘাটতির সম্মুখীন হয়। যে অঞ্চলগুলোয় গুরুতর ঘাটতি দেখা গেছে তার মধ্যে রয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ৪৪% কৃষি মৃত্তিকা, লাতিন আমেরিকায় ৩৯%, সাহারান আফ্রিকায় ৩০%, এবং পূর্ব এশিয়ায় ২০%। গবেষকদের মতে অতিরিক্ত কৃষিকাজ এর অন্যতম কারণ হতে পারে। তারা আরও বলেন শস্যের ফলন ধরে রাখার জন্য পটাশিয়াম গুরুত্বপূর্ণ। মাটিতে এই উপাদানের ঘাটতি দেখা দিলে সারা বিশ্বের লক্ষ লক্ষ মানুষের খাদ্য নিরাপত্তার ক্ষেত্রে একটি ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়াবে। সমস্যাটি বিশ্বে উপেক্ষিত এবং বিশ্বের জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে বিভিন্ন পদক্ষেপের মাধ্যমে সমাধান করা দরকার। কৃষি ক্ষেত্রে পটাশের ব্যবহার এবং পরিবেশে তার প্রভাব বেশি করে যাচাই করা প্রয়োজন। কৃত্রিমভাবে পটাশিয়াম সমৃদ্ধকরণ আমাদের পাশাপাশি বাস্তুতন্ত্রের উপর যে প্রভাব ফেলে সে সম্পর্কে আরও গবেষণাও দরকার। নাইট্রোজেন, ফসফরাস এবং পটাশিয়ামের মতো পুষ্টিকে ঠিকমতো ব্যবহার করলে আমরা একাধিক উপকার পেতে পারি, দূষণ প্রতিরোধ করতে পারি, ফসলের ফলন বাড়াতে পারি এবং পুষ্টির ক্ষতি হ্রাস করতে পারি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

12 − three =