সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাকহোলের অবস্থান হয় মূলয় ছায়াপথের কেন্দ্রে। এমনিতে আমাদের জানাবোঝার মধ্যে আছে যে ব্ল্যাকহোলগুলি মহাজাগতিক সকল বস্তুই বিরাট রহস্যময় পেটের ভেতর টেনে নেয়। কিন্তু আশ্চর্যের একটি নজির মিলেছে গ্যালাক্সি এম৮৭ এ। এম ৮৭ এর কেন্দ্রে অবস্থিত সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাকহোলের গভীর থেকে নির্গত হচ্ছে প্রকান্ড জেট বা বলা যেতে পারে বিদ্যুৎযুক্ত কণার স্রোত এবং তা ছড়িয়ে পড়ছে মহাকাশের হাজার হাজার আলোকবর্ষ এলাকায়। স্রোতের বিদ্যুৎ যুক্ত কণারই পদার্থবিজ্ঞানে পারিভাষিক নাম প্লাজমা। এই নির্গমনের পেছনের পদার্থ বিজ্ঞানটি ঠিক কী তা এখনো অজানা বিজ্ঞানীদের। তবে ফ্রাঙ্কফ্রুটের গোথ ইউনিভার্সিটির জ্যোতিঃপদার্থবিদ আলেজান্দ্রো ক্রুজ-ওসোরিও বলেন, স্রোতটি অতি চমকপ্রদ, বিষ্ময়কর।
ওসোরিও এবং তার সহকর্মীরা এম৮৭ এর সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাকহোলের একটি কম্পিউটার সিমুলেশন বানিয়েছেন। সিমুলেশনে দেখানো হয়েছে ঘুর্নায়মান গ্যাস চক্রের আকারে স্রোতের একটা জায়গায় রয়েছে। ওসোরিওদের লক্ষ্য এই সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাকহোলটির গঠন বুঝতে চাওয়া। নভেম্বরে ৪ তারিখে নেচার অ্যাসট্রোনমি পত্রিকায় গবেষকরা রিপোর্ট করেন যে ওঁদের তৈরি করা কম্পিউটার সিমুলেশনটি প্রকৃত জেট বা প্লাজমা স্রোতের অনুরুপ ছবিটি যথাযথ ভাবে প্রকাশ করছে।
প্রকৃতপক্ষে এম৮৭ এর সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাকহোলটি চুম্বকীয় ক্ষেত্র দ্বারা পেঁচিয়ে আছে। উচ্চশক্তি সম্পন্ন ইলেকট্রন কনা ও অন্যান্য পদার্থে চুম্বকীয় ক্ষেত্রটি আবৃত। গবেষকদের অনুমান ব্ল্যাকহোলটি ক্রমাগত ঘুর্নায়মান। ঘূর্ণনের গতি সম্ভাব্য গতির অন্তত ৯৪ শতাংশ। ব্ল্যাকহোলের মুখ থেকে যখন জেট বা প্লাজমা স্রোত নির্গত হয় ঐ স্রোতের চুম্বকীয় ক্ষেত্রটি তখন পুনর্বিন্যস্ত হয় – এই প্রক্রিয়ার নাম ম্যাগনেটিক রিকানেকশান। এতে ইলেকট্রন কনার বেগ বৃদ্ধি পায়। ফলে স্রোত উচ্চ শক্তি সম্পন্ন হয়ে ওঠে।