আকাশে আলোর একটা বেগুনি ফিতে দেখা যায় যা স্টিভ নামে পরিচিত। এটা ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সি স্যাটেলাইট সোয়ার্ম-এর অনুসন্ধান থেকে পাওয়া গেছে। এপ্রিলে আর্থ, প্ল্যানেটস অ্যান্ড স্পেস জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা বলছে, মধ্যরাতের আগে আকাশে এই বেগুনি আলোর স্টিভ উপস্থিত হয় যা পূর্ব থেকে পশ্চিমে প্রবাহিত হয়, আবার ভোরবেলা এটা বিপরীত দিকে প্রবাহিত হয়। ২০১৬ সালে এই ঘটনা প্রথম লক্ষ করেছিলেন, অপেশাদার অরোরা পর্যবেক্ষকদের একটি গ্রুপ। এই দলটির ফটোগ্রাফাররা উত্তর এবং দক্ষিণের সবুজ এবং লাল রঙের আলোর মধ্যে একটা রহস্যময় বেগুনি ফিতের ছবি তুলেছিলেন। স্টিভ কথার অর্থ হল শক্তিশালী তাপ নির্গমন বেগ বৃদ্ধি। গবেষকরা অনুসন্ধান করে পেয়েছেন, ৩০০ কিলোমিটারের ওপরে, তাপমাত্রা হঠাৎ ৩০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে যায়।
স্টিভ, কিন্তু অরোরা নয়, এটা ২৫ কিমি প্রশস্ত চার্জযুক্ত গ্যাসের ফিতে যা সাবঅরোরাল আয়ন ড্রিফট। সাবঅরোরাল আয়ন ড্রিফট, পোলারাইজেশন জেট নামেও পরিচিত, এটা পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে আয়নোস্ফিয়ারে সাবস্টর্ম দ্বারা চালিত হয়। এখানে আরোরার তুলনায় নিচু অক্ষাংশে বিভিন্ন চৌম্বক ক্ষেত্র বরাবর ভ্রমণকারী অত্যন্ত গরম কণা এই সাবঅরোরাল আয়ন ড্রিফট, স্টিভ সৃষ্টি করে। পরিমাপ করে দেখা গেছে এই গ্যাস প্রতি সেকেন্ডে ৬ কিলোমিটার গতিতে পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়, যা বায়ুমণ্ডলীয় গ্যাসের গতির চেয়ে ধীর। বায়ুমণ্ডলীয় গ্যাসের গতি প্রতি সেকেন্ডে ১০ কিমি। জাপানের ইউনিভার্সিটি অফ ইলেক্ট্রো-কমিউনিকেশনস, সুইডিশ ইনস্টিটিউট অফ স্পেস ফিজিক্স এবং নরওয়ের আর্কটিক ইউনিভার্সিটির গবেষকরা দুটো সোয়ার্ম স্যাটেলাইটের বেগুনি ফিতে পরিমাপ করে দেখেছেন যে, নিশ্চিতভাবে ভোরের আগে এই পূর্বমুখী প্রবাহযুক্ত গরম বেগুনি গ্যাস স্টিভের দোসর। তাদের গবেষণা সায়েন্স অ্যাডভান্সে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষকরা ফোটোগ্রাফারদের সহায়তায় স্টিভের দোসর আবিষ্কার করতে পেরে বেশ খুসি। তারা বলেছেন সামনেই সোলার ম্যাক্সিমাম বা সূর্যের সর্বোচ্চ ক্রিয়াকলাপ দেখা যাবে, যার বিভিন্ন ঘটনা চাক্ষুষ করতে এরকম সাহায্য খুবই প্রয়োজনীয়।