দেহ বা দেহাংশের ফসিলের ওপর সাধারণত গুরুত্ব দেওয়া হয়। মলও ফসিল হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিতে পারে। সেকথাই প্রমাণ করে দিলেন সুইডেনের উপ্পাসালা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানী মার্টিন কোভার্নস্ট্রম। ফসিল হয়ে যাওয়া মলের টুকরো কে বলা হয় কপ্রোলাইট। সম্প্রতি ‘কারেন্ট বায়োলজি ‘তে প্রকাশিত গবেষণা প্রবন্ধ থেকে জানা যাচ্ছে পোল্যান্ড থেকে এমনই সংগৃহীত কপ্রোলাইটের ভেতরে শক্তিশালী এক্স রে ফেলে খোঁজ পাওয়া গেছে এক নতুন প্রজাতির পোকা। যার বিজ্ঞানসম্মত নাম- ট্রিআম্যাক্সা কোপ্রোলিথিকা।
পোকা জাতীয় প্রাণীদের ফসিল অ্যাম্বারের ভেতর পেয়ে থাকি বলে কপ্রোলাইট দৃষ্টির বাইরে চলে যায়। অ্যাম্বার একরকমের গাছ নিসৃত আঠা। এর ইতিহাস মোটামুটি দেড় কোটি বছরের। কিন্তু যে কপ্রোলাইট থেকে নতুন পোকার প্রজাতির ইতিহাস মিলেছে সেই কপ্রোলাইট প্রায় আড়াই কোটি বছর আগে টার্সিয়াসিস যুগে বাস করা ডায়োনসর পূর্ব প্রজাতির একধরনের সরীসৃপের (বিজ্ঞানসম্মত নাম- সিলিয়েসরাস ওপোলেনসিস) মলের টুকরো। কপ্রোলাইট বা মল ফসিল আসলে লুপ্ত প্রাণীর খাদ্যাভ্যাস জানতে সাহায্য করে। যা শরীরের অন্য অংশের ফসিলে সম্ভব নয়। কোভার্নস্ট্রম মনে করিয়ে দিয়েছেন, কপ্রোলাইট বা মল ফসিল আসলে ধনসম্পদের ভাণ্ডারের মতো। অধিকাংশ সময় আমরা উপেক্ষা করি।
এক্ষেত্রে কোভার্নস্ট্রম ও তার দলের প্রচেষ্টায় গোটা পোকার ফসিল উদ্ধার সম্ভব হয়েছে। অ্যাম্বারের ভেতর প্রাপ্ত একই ধরণের পোকার ফসিলের থেকে এই পোকার বৈশিষ্ট্য আলাদা। সুতারাং ইতিপূর্বের ধারণার চেয়ে আবিষ্কৃত পোকার ফসিলটি তথা পোকাটি প্রাচীন। কপ্রোলাইট বা মল ফসিল ছাড়া এ পোকার সন্ধানই পাওয়া যেত না।