শুনতে অদ্ভুত লাগলেও এটা ঠিক মশা বেছে বেছে কিছু মানুষকে কামড়ায়। টেক্সাস এএন্ডএম এগ্রিলাইফ এক্সটেনশন সার্ভিসের কীটতত্ত্ববিদ এবং টেক্সাস এএন্ডএম কলেজ অফ এগ্রিকালচার অ্যান্ড লাইফ সায়েন্সেস ডিপার্টমেন্ট অফ এনটোমোলজির অধ্যাপক সোনজা সুইগার বলেছেন, কিছু বৈজ্ঞানিক প্রমাণ জানায় মশাদেরও মানুষকে কামড়ানোর সময় বিশেষ কিছু পছন্দকাজ করে। বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে মশারা ‘O’ গ্রুপের রক্ত পছন্দ করে। মেডিকেল এনটোমোলজি জার্নালে প্রকাশিত একটা সমীক্ষায় দেখা গেছে যে এক ধরনের মশার প্রজাতি অন্যদের তুলনায় ‘O’ গ্রুপের রক্তওয়ালা মানুষকে বেশি কামড়ায়। তবে এই পার্থক্য ‘O’ গ্রুপ আর ‘A’ গ্রুপের মধ্যে তুলনামূলকভাবে উল্লেখযোগ্য, কিন্তু অন্যান্য রক্তের গ্রুপের ক্ষেত্রে এ বিষয়ে সেরকম কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। যারা নেশা করে তাদের নিঃশ্বাসে বেশি কার্বন ডাই অক্সাইড বের হয় আর তাদের ঘাম বেশি হয়। এগুলোও মশাকে আকৃষ্ট করে।
সুইগার বলেছেন ডায়েটও মানুষের প্রতি মশার আকর্ষণকে নিয়ন্ত্রিত করতে পারে, তবে এর প্রভাব কতটা তা সম্পূর্ণ অন্বেষণ করা হয়নি। বলা হয় রসুন এবং ভিটামিন বি মশা প্রতিরোধ করে তবে এর প্রমাণ সীমিত। তিনি বলেন, কলা ও অন্যান্য উচ্চ-পটাসিয়ামযুক্ত খাবার মশাকে আকৃষ্ট করতে পারে, কারণ এগুলো শরীরে ল্যাকটিক অ্যাসিডের উৎপাদন বাড়ায়। এগুলো একজন ব্যক্তির ত্বকের মাইক্রোবায়োটা, বা ত্বকের ওপর জীবিত অণুজীবের ওপর প্রভাব ফেলে। এতে মশারা প্রাণীদের সহজে শনাক্ত করতে পারে।
গর্ভবতী মহিলাদেরও মশা বেশি ছেঁকে ধরে, তার প্রাথমিক কারণ গর্ভবতী মহিলাদের কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমন বেশি হয়। বলা হয় গর্ভাবস্থার শেষের দিকে গর্ভবতী মহিলারা অন্যান্য মহিলাদের তুলনায় প্রায় ২১% বেশি শ্বাস ছাড়েন। তার সাথে অন্যান্য শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তন হয়, যেমন শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি, যা গর্ভবতী মহিলাদের প্রতি মশাকে আকৃষ্ট করে।
বিবর্তনীয় বৈশিষ্ট্যের জন্য মশা কখনও কখনও নির্দিষ্ট স্বাদে অভ্যস্ত হয়। কিছু নির্দিষ্ট এলাকার মশা নির্দিষ্ট গন্ধে অভ্যস্ত হয়ে উঠতে পারে। যেমন শহুরে মশা যারা মানুষকে কামড়ায় তারা প্রায়শই বেশি দূর ভ্রমণ করে না, তাদের প্রজন্ম প্রায় দুই সপ্তাহ দীর্ঘ ফলে তারা স্থানীয় গন্ধের সাথে পরিচিত হয়ে যায় বলে গবেষকরা অনুমান করেন। তবে মশা আপনাকে পছন্দ করুক বা না করুক এই বর্ষায় মশা থেকে বাঁচতে সাবধানতা অবলম্বন করুন।