
কনস্টানজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা অ্যালকোহল সেবনের ঝুঁকি সম্পর্কিত জনস্বাস্থ্য প্রচার অভিযানের কার্যকারিতা মূল্যায়নের জন্য একটি নতুন পদ্ধতি তৈরি করেছেন। এই পদ্ধতিতে ইলেক্ট্রোএনসেফালোগ্রাফি (ইইজি) ব্যবহার করে দর্শকদের মস্তিষ্কের কার্যকলাপের সমন্বয় পরিমাপ করা হয়। কনস্টানজ এক্সেলেন্স ক্লাস্টার “কলেক্টিভ বিহেভিয়ার”-এর সাইকোলজিস্ট হারাল্ড শুপ এবং ব্রিটা রেনারের নেতৃত্বে এই গবেষণা করা হয়েছে। এই পদ্ধতির লক্ষ্য হলো স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বার্তাগুলো কতটা কার্যকরভাবে দর্শকদের কাছে পৌঁছাচ্ছে তার একটি বিষয়গত পরিমাপ করা, যা প্রচার অভিযানের উপকরণ উন্নয়ন এবং নির্বাচনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে।
পূর্বে এই ধরনের মূল্যায়ন ল্যাবরেটরির পরিবেশে এফএমআরআই বা ইইজির মতো উন্নত ইমেজিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে করা হতো। এই গবেষণাগুলো দেখিয়েছে যে বিশেষভাবে প্রভাবশালী বার্তাগুলো দর্শকদের মস্তিষ্কের কার্যকলাপে বেশি সমন্বয় সৃষ্টি করে, বিশেষ করে মনোযোগ, আবেগ এবং ব্যক্তিগত প্রাসঙ্গিকতার সাথে জড়িত মস্তিষ্কের অংশে। তবে সাম্প্রতিক গবেষণায় একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখা গেছে। সেখানে সহজ এবং বহনযোগ্য ইইজি যন্ত্র কৌশল ব্যবহার করে একটি প্রামাণিক সেমিনার কক্ষে দর্শকদের মস্তিষ্কের তরঙ্গ পরিমাপ করা হয়েছে। এটি ল্যাবরেটরির নিয়ন্ত্রিত পরিবেশের বাইরে এই পদ্ধতির ব্যবহারের সম্ভাবনা প্রমাণ করেছে এবং পদ্ধতিটিকে আরও সাশ্রয়ী ও বাস্তব-জীবন উপযোগী করেছে।
গবেষণার ফলাফল অনুযায়ী, অ্যালকোহল সেবনের ঝুঁকি সম্পর্কিত কার্যকর ভিডিও বার্তাগুলো দর্শকদের মস্তিষ্কের কার্যকলাপে বেশি সমন্বয় সৃষ্টি করে, এমনকি কম নিয়ন্ত্রিত অবস্থাতেও। এই সমন্বয় একটি বার্তার প্রভাবের সূচক হিসেবে কাজ করতে পারে, যা স্বাস্থ্য প্রচার অভিযানের উন্নয়নে একটি মূল্যবান সরঞ্জাম হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। গবেষকরা আশা করছেন যে ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবরেটরির বাইরে ছোট “নিউরাল” ফোকাস গ্রুপে ইইজি গবেষণা করা হলে তা জনস্বাস্থ্য উদ্যোগের কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এই গবেষণা কনস্টানজ এক্সেলেন্স ক্লাস্টার “কলেক্টিভ বিহেভিয়ার”-এর বৃহত্তর প্রচেষ্টার অংশ, যা সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং সামাজিক খাদ্যাভ্যাস সহ বিভিন্ন দলগত আচরণ নিয়ে কাজ করে। জার্মান রিসার্চ ফাউন্ডেশন এবং মেসমার ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে এই প্রকল্পটি পরিচালিত হয়েছে, যা জনস্বাস্থ্য প্রচারের কৌশল উন্নয়নে এর গুরুত্ব তুলে ধরেছে । ল্যাবরেটরি গবেষণা এবং বাস্তব-জীবনে প্রয়োগের মধ্যে ব্যবধান কমিয়ে এই উদ্ভাবনী পদ্ধতি অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবনের মতো ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ কমানোর লক্ষ্যে স্বাস্থ্য প্রচার অভিযানের কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করতে পারে।