২০২০-র পৃথিবী ছিল মহামারীর পৃথিবী! চাঁদের দিকে তাকিয়ে সাধারণ মানুষ তাকে ‘চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি’ বলার সময় পর্যন্ত পায়নি! করোনা ভাইরাসের বিরামহীন আক্রমণ এবং তাকে প্রতিরোধ করতে বিশ্ব জোড়া লকডাউনের ধাক্কায় লক্ষ লক্ষ মানুষের রাতের ঘুম চলে গিয়েছিল এক টুকরো ‘রুটি’র খোঁজ পেতে। তীব্র আর্থিক অনটনের পৃথিবীতে কর্মহীন মানুষের সংখ্যা, বেকারত্বের সংখ্যা যেমন বেড়েছে উল্টোদিকে ২০২০-র পৃথিবীতে একটা চোখে পড়ার মত কাজ স্বাভাবিকভাবে হয়েছে। তা হল বাতাসে দূষণের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গিয়েছিল। গ্রীনহাউস গ্যাস নিঃসরণকারী শিল্পাঞ্চল লকডাউনের জেরে বন্ধ থাকায়।
বিশ্বজুড়ে এই ছবিতে ব্যতিক্রম ব্রাজিল। তাদের গ্রীনহাউস গ্যাস নিঃসরণের পরিমাণ ২০১৯-এর চেয়ে ৯.৫ শতাংশ বেশি! সাম্প্রতিক গবেষণায় উঠে এসেছে এই তথ্য। জানা গিয়েছে ২০২০-তে ব্রাজিলে গ্রীনহাউস গ্যাস নিঃসরণের পরিমাণ ২.১৬ বিলিয়ন টন! সেখানে ২০১৯-এ পরিমাণটা ছিল ১.৯৭ বিলিয়ন টন।
আমরা বিস্মিত হতে পারি। কিন্তু গবেষকরা বিস্মিত হননি। বলছেন, “আমাজনের জঙ্গল কতবার পোড়ানো হয়েছে জানেন? বা আমাজনের জঙ্গলে কতবার দাবানল লেগেছে পুরো বছরটা জুড়ে তার হিসেব আছে? কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ তো বেশি হবেই।”
ব্রাজিলের বর্তমান সরকারের অঙ্গীকার, ২০৫০-এর মধ্যে দেশের কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনা হবে! মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও গলা মিলিয়ে বলেছেন ২০৩০-এর মধ্যে আমাজনে অবৈধভাবে জঙ্গল নিধন বন্ধ করে দেওয়া হবে! বাইডেন আবার এরই মধ্যে বলেছেন, আমাজনে স্থানীয় আদিবাসীদের দ্বারা সংরক্ষিত জমিতে অবশ্য কৃষিকাজ এবং বাণিজ্যিক উদ্দেশে খননের কাজ হতে পারে! কিন্তু জঙ্গল ধ্বংস করে নয়! বাস্তবে তা আদৌ সম্ভব কি না সেটা অবশ্য সময় বলবে!