মানুষের চোখের কার্যপ্রণালী অনুসরণে নতুন ক্যামেরা

মানুষের চোখের কার্যপ্রণালী অনুসরণে নতুন ক্যামেরা

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৫ জুলাই, ২০২৪
মানুষের-চোখ

মানুষের দৃষ্টিশক্তি অনুসরণে রোবটের দৃষ্টিশক্তি তৈরি করতে গবেষকরা চোখের পরিবর্তে ক্যামেরা আর মস্তিষ্কের পরিবর্তে কম্পিউটার সফটওয়্যার ব্যবহার করে রোবটের দৃষ্টিশক্তি উন্নত করার চেষ্টা করেছেন। ইউনিভার্সিটি অফ মেরিল্যান্ড কম্পিউটার সায়েন্টিস্টদের দল একধরনের কার্যকর ক্যামেরা পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন, যা মানুষের চোখের কার্যপ্রণালীর ভিত্তিতে তৈরি। এই কৃত্রিম ক্যামেরা সিস্টেম মানুষের চোখের ক্ষুদ্র অনৈচ্ছিক আন্দোলন অনুকরণ করে যা মানুষকে স্পষ্ট ও স্থিতিশীল দৃষ্টি দেয়। তারা এর নাম দিয়েছেন কৃত্রিম মাইক্রোস্যাকেড-এনহ্যান্সড ইভেন্ট ক্যামেরা (এএমআই-ইভি) যার সম্বন্ধে সায়েন্স রোবোটিক্স জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। চিরাচরিত ক্যামেরার তুলনায় এতে যে কোনো আন্দোলিত বস্তুর ছবি ঝাপসা না হয়ে স্পষ্টভাবে ফুটে ওঠে। রোবোট বা স্বচালিত গাড়ির ক্ষেত্রে পরিবেশের পরিবর্তন হওয়ার সাথে সাথে নির্ভুল ও সময়ানুসারী চিত্র জরুরি। মানুষ যখন কোনো বস্তু দেখার জন্য ফোকাস করে তখন অনৈচ্ছিকভাবে তার দ্রুত চোখের আন্দোলন হয়, ও সেই চিত্র তার চোখে স্পষ্টভাবে ফুটে ওঠে। মানুষের চোখের এই কার্যপ্রণালী কৃত্রিম ক্যামেরাতে ধরা হয়েছে। মানুষের চোখের সূক্ষ অনবরত আন্দোলন স্বাভাবিকভাবে বস্তুর রঙ, বর্ণ, মাত্রা সময়ের সাথে সাথে সবই স্পষ্টভাবে দেখতে সাহায্য করে।
গবেষকরা এএমআই-ইভি -এর ভেতরে একটা ঘূর্ণায়মান প্রিজম ঢুকিয়েছেন, যা লেন্সের মাধ্যমে ধরা পড়া আলোকরশ্মিকে পুনঃনির্দেশিত করবে। প্রিজমের ক্রমাগত ঘূর্ণন মানুষের চোখের স্বাভাবিক আন্দোলনের মতো নড়াচড়া করা বস্তুগুলোকে অনুকরণ করে বস্তুর স্থিতিশীল একটা চিত্র তৈরি করে। গবেষকরা সফটওয়্যারের মাধ্যমে এএমআই-ইভি -এর মধ্যে প্রিজমের আন্দোলন নিয়ন্ত্রণ করেন, যাতে চিত্রগুলো স্থিতিশীল অবস্থায় একত্রিত করা যায়। গবেষকরা আরও বিশ্বাস করেন যে তাদের উদ্ভাবন রোবোটিক্স এবং জাতীয় প্রতিরক্ষার বাইরে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। শিল্পক্ষেত্রে বহু স্থানে বিজ্ঞানীদের সঠিক চিত্র ধরা ও আকৃতি শনাক্তকরণের ওপর নির্ভর করতে হয়, সেক্ষেত্রে এএমআই-ইভি অনেক সমস্যার সমাধান করতে পারে।