মানুষের দীর্ঘায়ু নিয়ে বিজ্ঞানীদের ব্যাখ্যা

মানুষের দীর্ঘায়ু নিয়ে বিজ্ঞানীদের ব্যাখ্যা

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২০ এপ্রিল, ২০২২

কচ্ছপের মতো প্রাণী ব্যতিক্রম। তাদের বাদ দিলে এই পৃথিবীর অধিকাংশ প্রাণীদের থেকেই দীর্ঘজীবী মানুষ। ঠিক কীভাবে অন্যদের আয়ুর হিসেবে পিছনে ফেলে দিয়েছে তারা? সম্প্রতি এই বিষয়েই ব্যাখ্যা পাওয়া গেল বিজ্ঞানীদের কাছ থেকে। আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা নেচারে প্রকাশিত একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় জানা গিয়েছে, ব্রিটেনের ওয়েলকাম স্যাঙ্গার ইনস্টিটিউটের গবেষকরা মানুষ-সহ ১৬টি প্রজাতির প্রাণীর ওপরে গবেষণা চালিয়েছিলেন। ইঁদুর, সিংহ, জিরাফের পাশাপাশি ‘নেকেড মেল র্যা ট’ নামের এক ধরনের ইঁদুর, যাদের শরীর অত্যধিক ক্যানসারপ্রবণ, তাদেরও পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে।

বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, যে প্রাণীর জিনগত মিউটেশন (Mutation) যত ধীরগতিতে হয়, সাধারণ ভাবে তারাই তত বেশি দীর্ঘজীবী হয়। বিজ্ঞানীরা খতিয়ে দেখেছেন সেই বিষয়টিই। তাঁদের মূল পর্যবেক্ষণ ছিল বয়স বাড়া ও ক্যানসার- এই দু’টি দিকে। মোট ১৬টি প্রজাতিকে পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। পরীক্ষা থেকে পরিষ্কার, জিরাফের থেকে বেশিদিন বাঁচে মানুষ থেকে বাঘ, সব স্তন্যপায়ীরা। অন্যতম গবেষক ড. অ্যালেক্স ক্যাগান জানিয়েছেন, “ইঁদুর থেকে বাঘ, নানা ধরনের প্রাণীর শরীরে জিনগত পরিবর্তনের ধাঁচ লক্ষ করে আমরা অবাক হয়ে গিয়েছি। কিন্তু সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হল, গবেষণা থেকে জানা গিয়েছে মিউটেশনের হারের গতির সঙ্গে আয়ুষ্কালের সম্পর্ক ব্যাস্তানুপাতিক।” কী করে ধীরে ধীরে একটি শরীর বার্ধক্যের দিকে এগিয়ে যায়, সেপ্রসঙ্গে ওই বিজ্ঞানীর বক্তব্য, ”এটা অত্যন্ত জটিল এক প্রক্রিয়া। আমাদের কোষ ও কলায় যে আণবিক ক্ষতি হতে থাকে তার ফলেই ধীরে ধীরে বুড়িয়ে যায় শরীর। গত শতাব্দীর পাঁচের দশক থেকেই জানা গিয়েছিল, সোমাটিক মিউটেশনের কথা। কিন্তু আজও একে নিয়ে পরীক্ষা চালানো কঠিন।” তবে আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যেই যে এই পর্যবেক্ষণ সম্ভব হল তা পরিষ্কার করে দিয়েছেন তিনি।