মানুষের শরীরে প্রথম শূকরের হৃদপিণ্ড প্রতিস্থাপন

মানুষের শরীরে প্রথম শূকরের হৃদপিণ্ড প্রতিস্থাপন

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১৩ জানুয়ারী, ২০২২

বিশ্বের প্রথম ব্যক্তি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের একজন রোগী মি. বেনেটের শরীরে শূকরের হৃদপিণ্ড প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। প্রতিস্থাপনের আগে শূকরের হৃদপিণ্ডটি জেনেটিকালি রূপান্তরিত করে নেওয়া হয়েছিল। কারণ সেখানে এমন কিছু ছিল যা বেনেটের শরীরের সাথে খাপ খায় না। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন সাত ঘন্টা ধরে চলেছে অস্ত্রোপচার। তিনদিন পরেও আপাতত সুস্থ আছেন ৫৭ বছর বয়সী মি. বেনেট। এর আগে ২০২১ সালে অক্টোবর মাসে নিউ ইয়র্কে চিকিৎসকরা এক ব্যক্তির শরীরে সফল ভাবে কিডনি প্রতিস্থাপন করেন। যদিও শেষ পর্যন্ত পেশেন্ট কোমায় চলে যান। সুস্থ জীবন যাপনের আশা আর ছিলনা। তবে মি. বেনেটের ক্ষেত্রে আশা করা হচ্ছে যে, ইনি আবার সুস্থ স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবেন। আশার কথা গত সোমবার থেকে তিনি নিজে থেকে শ্বাস নিতে শুরু করেছেন৷
বিশ্বে প্রথমবার এই জটিল অস্ত্রোপচারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসা তদারকি কতৃপক্ষ ইউনিভার্সিটি অফ মেরিল্যান্ড মেডিকেল সেন্টারকে বিশেষ অনুমতি দিয়েছিল। যদিও হৃদপিণ্ড প্রতিস্থাপনের উপযুক্ত সুস্থ তিনি ছিলেন না। ছয় সপ্তাহ আগে গুরুতর হৃদরোগ শনাক্ত হয় তাঁর। শয্যাশায়ী অবস্থায় শরীরে সংযুক্ত যন্ত্রই তাঁকে বাঁচিয়ে রেখেছিল। সুস্থ হয়ে বাঁচার জন্য কিন্তু অস্ত্রোপচারের ঝুঁকি নেওয়া ছাড়া মি. বেনেটকে বাঁচাবার আর কোনো রাস্থা ছিল না৷ মি. বেনেটের জীবন বাঁচাতে চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে অন্তিম একটা প্রচেষ্টা ছিল এই অস্ত্রোপচার। বেনেট নিজেও বলেছিলেন আমার সামনে দুটো রাস্থা হয় অস্ত্রোপচার, নয় মৃত্যু। যদি সত্যিই শেষ অবধি এ অস্ত্রোপচার সফল হয় তাহলে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের জীবন বদলে যাবে। যে চিকিৎসক দল এই অস্ত্রোপচার করেছেন তারা দীর্ঘদিন ধরেই এ নিয়ে গবেষণা করছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রে এ ধরনের সংকটে অঙ্গ প্রতিস্থাপনের জন্য অপেক্ষা করতে গিয়ে প্রতিদিন ১৭ জন মানুষের মৃত্যু হয়। প্রত্যঙ্গ প্রতিস্থাপনের অপেক্ষার তালিকায় প্রায় লক্ষাধিক মানুষ রয়েছেন। ফলে প্রতিস্থাপনের জন্যে পশুদেহের প্রত্যঙ্গ প্রতিস্থাপনের কথা দীর্ঘদিন বিবেচনার পর্যায়ে আছে। যেমন হৃদপিন্ডে শূকরের ভালব ব্যবহার এখন প্রায় নিয়মিত হয়ে উঠেছে। ইউনিভার্সিটি অফ মেরিল্যান্ড স্কুল অফ মেডিসিনের এক সার্জেন বার্টেল গ্রিফিথ বলেন, অঙ্গপ্রত্যঙ্গ স্বল্পতার সমাধানে এই অস্ত্রোপচার বিশ্বকে এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে।