মায়ানমারের অ্যাম্বার চমৎকার, কিন্তু পিছনে লুকিয়ে আছে কুটিল রহস্য

মায়ানমারের অ্যাম্বার চমৎকার, কিন্তু পিছনে লুকিয়ে আছে কুটিল রহস্য

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা‌।
Posted on ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

ঝকঝকে সোনালি কাচের পাথর। তার ভেতরে জীবাশ্ম হয়ে বন্দী প্রাচীন ইতিহাসের টুকরো। ব্যাপারটা লোভনীয় হয়ে ওঠে আরও খানিকটা যদি ডাইনোসরের ছাপও মেলে ঐ তৈলস্ফটিকে।
মায়ানমারের যে অংশে খনির নীচে এই অ্যাম্বার পাথর পাওয়া যায়, সেখানে হিংসাত্মক রাজনীতি চলছে আজকাল। যদিও নতুন গবেষণা বলছে, জীবাশ্মতত্ত্বের ইতিহাসে এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পেপার। হালের কিছু বছরে ঐ দেশ থেকে যত অ্যাম্বার মিলেছে, সবকটাই কিন্তু অতুলনীয় সব জীবাশ্মের ছাপে ভরপুর। সাথে আছে প্রাগৈতিহাসিক ফুল, চমকে দেওয়ার মতো পতঙ্গের ছবিও।
কিন্তু, ঐশ্বর্য্যের মূল্য তো চোকাতেই হয়। আর সেখান থেকেই শুরু মায়ানমারের অ্যাম্বারের নীচে থাকা ন্যক্কারজনক অধ্যায়। জার্মানির ফ্রেডরিখ অ্যালেকজান্ডার বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবাশ্মবিদ নুসিবা রেজা শোনাচ্ছেন এক ভয়ানক গল্প। উনি বিগত এক দশকের বেশি সময় ধরে অ্যাম্বার ফসিলের উপর প্রকাশিত হাজারটা গবেষণাপত্র সরেজমিনে তদন্ত করে দেখেছেন। কুচক্রের নাম উনি দিচ্ছেন প্যারাসুট সায়েন্স বলে।
প্যারাসুট সায়েন্স বিষয়টা ঠিক কী? ধনী দেশের বিজ্ঞানীরা স্থানীয় গবেষকদের সাথে যোগাযোগের তোয়াক্কা না করেই নানান অবৈধ বাণিজ্যিক পথে অ্যাম্বার কিনে নেন, আর মুড়িমুড়কির মতো গবেষণাপত্র প্রকাশ করে খ্যাতির শিরোনামে আসেন। বঞ্চিতই থেকে যান মায়ানমারের বিজ্ঞানীরা। অর্থাৎ, ঘুরপথে পৃথিবীতে পুনরায় ফিরে এসেছে ঔপনিবেশিক অন্ধকার ইতিহাসের দিনগুলো।
ডঃ রেজার সাথে নতুন এই প্রতিবাদী গবেষণাপত্রে সামিল ছিলেন মায়ানমারের মান্দালয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবাশ্মতাত্ত্বিক জিন-মাউং থেন। এটা পড়ে অনেক গবেষকই স্তম্ভিত। এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিভ ব্রুস্যাট বলছেন, যখন যুদ্ধ চলছে তখন জীবাশ্মের মূল্য অবশ্যই মানুষের জীবনের চেয়ে বেশি নয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

15 − 14 =