মৃত্যুর দু’সপ্তাহ আগে যাওয়ার সংকেত আসে!

মৃত্যুর দু’সপ্তাহ আগে যাওয়ার সংকেত আসে!

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা।
Posted on ১৮ জুলাই, ২০২২

মৃত্যুকে এড়ানো সম্ভব নয়। কিন্তু মৃত্যুর সংকেত যদি আগে পাওয়া যায়? সত্যিই কি মৃত্যুর উপলব্ধি করা যায়? মারা যাওয়ার মুহূর্তের অনূভুতি ঠিক কেমন হয়? এই নিয়ে অজস্র প্রশ্ন যুগ যুগ ধরে মানুষের মনে ঘুরছে। এমনকী, বিজ্ঞানেরও এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে জানা বেশি নয়। সম্প্রতি ইংল্যন্ডের এক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের দাবি, কোনও মানুষের প্রয়াণের আগে মৃত্যু তাকে কিছু সংকেত দেয়। যার প্রতিফলনে বোঝা যায় ওই ব্যক্তির মৃত্যু আসন্ন। অন্তত অসুস্থ মানুষের ক্ষেত্রে। কারণ, দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুর ক্ষেত্রে আগে থেকে সংকেত পাওয়া না-ও যেতে পারে। লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয়ের অনারারি রিসার্চ ফেলো এবং প্যালিয়েটিভ কেয়ার ইউনিটের চিকিৎসক সিমাস কোয়েলের মত কোনও মানুষের মৃত্যুর প্রকৃত সময়ের অন্তত দু’সপ্তাহ আগে থেকে তার প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়। এই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও গবেষণা তিনি করেননি। কিন্তু পেশাদার জীবনে তিনি অন্তত কয়েকশো মানুষের মৃত্যু কাছ থেকে দেখেছেন।
কনভারসেশন পত্রিকায় দেওয়া সাক্ষাতকারে কোয়েলের বক্তব্য, হৃদস্পন্দন বন্ধ হওয়ার অন্তত দু’সপ্তাহ আগে থেকে তার প্রক্রিয়া শুরু হয়। সিমাস জানিয়েছেন, মৃত্যুর বিভিন্ন মানুষের শরীরে নানারকমের ঘটনা ঘটতে থাকে। তাই সঠিক ভবিষ্যদ্বাণী করা সম্ভব না হলেও চিকিৎসকরা তাদের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বুঝতে পারেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মৃত্যুর সম্ভাবনা কতটা এবং সেটা কতদিনের মধ্যে ঘটতে পারে। কোয়েলের বিশ্লেষণ, “প্যালিয়েটিভ কেয়ারের একজন বিশেষজ্ঞ হিসেবে আমার মনে হয় মৃত্যুর একটা প্রক্রিয়া আছে এবং সেটা মৃত্যুর অন্তত দু’সপ্তাহ আগে শুরু হয়। যেমন মানুষের স্বাস্থ্য খারাপ হওয়া, সারাক্ষণ ঝিমোনো ভাব, ঘুমের মধ্যে বারবার চমকে ওঠা, একদম শেষের দিকে খাওয়ার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলা, এমনকী, জল পর্যন্ত না খেতে পারা।”
মৃত্যুর সময় শরীরে কী কী ঘটে তা এখনও জানা যায়নি। কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে, মৃত্যুর আগে মস্তিষ্ক থেকে বিভিন্ন রাসয়নিক পদার্থ নির্গত হতে থাকে। এর মধ্যে এন্ডোরফিনও থাকে, যা মানুষের উচ্ছ্বাসের অনূভুতি প্রকাশের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গবেষকরা মনে করেন, এই রাসয়নিকটি নিঃসরণের কারণেই মৃত্যু প্রক্রিয়া চলাকালীন মানুষের ব্যথা-যন্ত্রণা কমতে থাকে। তবে গবেষকদের একাংশের আবার মত, মৃত্যুর আগের মূহুর্তে মানুষের শরীরে রাসয়নিক ক্রিয়াকলাপ বেড়ে যায়। চাপও প্রবলভাবে বেড়ে যায়। ক্যানসারের মত রোগীর শরীরে মৃত্যুর আগে প্রদাহেরও সৃষ্টি হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

3 × five =