কেবল উত্তর গোলার্ধে দেখা গেল অরোরা বোরিওলিস- মেরুপ্রদেশের অনন্যসুন্দর আলার নাম। গত শনিবার এতটাই উজ্জ্বল অরোরা তৈরি হয়, যা পৃথিবীর নিম্ন অক্ষাংশের অঞ্চলগুলো থেকেও দেখা গেছে। সূর্য থেকে তড়িতাহিত সৌরকণা এসে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের ওপরের স্তরে আঘাত করে। আর পৃথিবীর চুম্বকক্ষেত্রের প্রভাবে সৌরকণাগুলো পৌঁছে যায় দুই মেরুতে- তার ফলেই পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সবুজাভ আলো দেখা যায়- যা অরোরা নামে পরিচিত। নর্দার্ন লাইটসকে অরোরা বোরেলিস বলা হয়। এবং সাউদার্ন লাইটস অরোরা অস্ট্রালিস হিসেবে পরিচিত। টুইটারে এবারের অরোরার একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন আইসল্যান্ডের আলোকচিত্রী জন ওয়েদারবি। সঙ্গে লিখেছেন, ‘আজকের রাতটি যেন সত্যিই এক স্বপ্ন।’ উত্তর গোলার্ধে বেশি হয় বলে এমন আলোকে নর্দার্ন লাইটসও বলা হয়। দক্ষিণ মেরুতে হলে সেটাকে বলা হয় সাউদার্ন লাইটস।
গত বৃহস্পতিবার নাসার সোলার ডাইনামিকস অবজারভেটরিতে ‘এক্স১’ শ্রেণির সৌরশিখা নির্গত হয়েছে ধরা পড়ে। (তীব্র শ্রেণির সৌরকণাকে নাসা ‘এক্স’ নামে চিহ্নিত করে। আর পাশের সংখ্যাটি তীব্রতা প্রকাশক।) বড় সোলার ফ্লেয়ার বা সৌরশিখার ক্ষেত্রে সূর্য থেকে শক্তিশালী তেজস্ক্রিয় বিকিরণ হয়, যার নাম ‘করোনাল মাস ইজেকশন’। এতে পৃথিবীর দিকে একসঙ্গে তীব্র গতিতে সাধারণের চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণে তড়িতাহিত সৌরকণা ধেয়ে আসে। গত বৃহস্পতিবারে এমনটাই হয়েছে। পৃথিবীর দিকে সৌরকণাগুলো ঘণ্টায় ৩৫ লাখ কিলোমিটার বেগে ছুটে আসে।স্পেস ডট কম এর প্রতিবেদন অনুযায়ী ঐ সৌরকণা শনিবার রাতে এসে পৌঁছায় পৃথিবীতে। বিজ্ঞানীরা এবারের সৌরঝড়কে ‘জি৩’ পর্যায়ের জিওম্যাগনেটিক ঝড় হিসেবে চিহ্নিত করেন। অরোরা দৃশ্যমান হলেও এই ধরণের ঝড়ের বিপদের দিকটি হলো এই তেজস্ক্রিয় বিকিরণ পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের উপরিতলে আঘাত করার ফলে ইন্টারনেট যোগাযোগ ব্যবস্থা ও স্যাটেলাইট ব্যবিস্থা বিঘ্নিত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের স্পেস ওয়েদার প্রেডিকশন সেন্টার (এসডব্লিউপিসি) শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানায়, ‘আমাদের প্রযুক্তিগত অবকাঠামোর ওপর জি৩ শ্রেণির ঝড়ের প্রভাব সচরাচর নামমাত্র হয়ে থাকে।
বর্তমানে ১১ বছরের একটি চক্রের শুরুর দিকে আছে সূর্য। চক্রটি ‘সোলার সাইকেল ২৫’ হিসেবে পরিচিত। চলতি মাসের এক্স১ শ্রেণির সৌরশিখাটি বর্তমান চক্রের দ্বিতীয় ঘটনা। এর আগে গত ৩ জুলাই এক্স১.৬ শ্রেণির একটি সৌরশিখা নির্গত হয়।