মোবাইল ফোন থেকে ব্রেন ক্যান্সার হয়না : হু গবেষণায় নিশ্চিত করেছে

মোবাইল ফোন থেকে ব্রেন ক্যান্সার হয়না : হু গবেষণায় নিশ্চিত করেছে

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
মোবাইল ফোন থেকে ব্রেন ক্যান্সার

মোবাইল ফোন বড়োই বিপজ্জনক। আমরা সচরাচর মোবাইল ফোন মাথার কাছে, কানের পাশে ধরে কথা বলে থাকি। ফোন থেকে এক ধরনের নন-আয়নাইজিং বিকিরণ বা রেডিও তরঙ্গ নির্গত হয়। এই রেডিও তরঙ্গ থেকে ক্যান্সার অনিবার্যই। এমনকি, তা আমাদের ব্রেন ক্যান্সার বা ব্রেন টিউমারের সম্ভাবনাও বহু গুন বাড়িয়ে তোলে। এতদিন আমাদের এই ধারণাই ছিল। কিন্তু সম্প্রতি স্বাস্থ্যে রেডিও তরঙ্গের প্রভাব নিয়ে পদ্ধতিগত পর্যালোচনা থেকে জানা গেছে যে মোবাইল ফোনের সাথে মস্তিষ্কের ক্যান্সারের কোনো সম্পর্কই নেই। পর্যালোচনাটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কতৃক করা হয়েছে এবং এনভায়রনমেন্ট ইন্টারন্যাশনাল জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
মোবাইল ফোনের থেকে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা দীর্ঘদিনের উদ্বেগের বিষয়। মোবাইল ফোনের মতো আরও অনেক ধরনের বেতার প্রযুক্তি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি প্রধান অংশ। তাই মানুষকে এই যন্ত্রগুলো থেকে সুরক্ষা দেওয়া বিজ্ঞানের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। বহু বছর ধরেই বলা হয়েছে মোবাইল ফোনের রেডিও তরঙ্গ এবং মস্তিষ্কের ক্যান্সার মধ্যে কোন সম্পর্ক নেই। তাসত্ত্বেও, মাঝে মাঝে কিছু গবেষণায় প্রকাশিত হয়েছে যে মোবাইল ফোন থেকে ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। ২০১১ সালে, ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যান্সার (IARC) রেডিও ওয়েভ এক্সপোজারকে কার্সিনোজেন হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করেছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত এই শ্রেণীবিভাগের অর্থটি ভুল বুঝে মানুষের মধ্যে উদ্বেগ বেড়ে যায়। IARC বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অংশ। তারা মূলত মানুষের পর্যবেক্ষণমূলক গবেষণার সীমিত প্রমাণের উপর ভিত্তি করে এই পরামর্শ দিয়েছিলেন। মানুষের পর্যবেক্ষণমূলক গবেষণার এই নতুন পদ্ধতিগত পর্যালোচনা ২০১১ সালের IARC-র পরীক্ষা করা তথ্যের তুলনায় অনেক বড়ো ডেটা সেটের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। এতে আরও সাম্প্রতিক এবং আরও বিস্তৃত গবেষণা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। সুতরাং আমরা এখন আরও আত্মবিশ্বাসী হতে পারি যে মোবাইল ফোন বা ওয়্যারলেস প্রযুক্তি থেকে রেডিও তরঙ্গের এক্সপোজার মস্তিষ্কের ক্যান্সারের ঝুঁকির সাথে যুক্ত নয়। নতুন এই অধ্যয়ন জানিয়েছে মোবাইল ফোন ব্যবহার এবং মস্তিষ্কের ক্যান্সার বা অন্য কোনো মাথা বা ঘাড়ের ক্যান্সারের মধ্যে কোনো সম্পর্ক পাওয়া যায়নি। একজন ব্যক্তি যদি দশ বা তার বেশি বছর ধরে সারাদিনে বহুক্ষণ মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন তাহলেও সে ফোন ব্যবহারের জন্য ক্যান্সারে আক্রান্ত হবে না। মোবাইল ফোন নিরাপত্তা সীমার নীচে সীমিত পরিমাণে রেডিও তরঙ্গ নির্গত করে, এবং এর সংস্পর্শে মানব স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব পড়ে এমন কোনও প্রমাণ নেই।