রিমোটে নিয়ন্ত্রণ মাংসাশী গাছ! আবিষ্কার সুইডিশ গবেষকের

রিমোটে নিয়ন্ত্রণ মাংসাশী গাছ! আবিষ্কার সুইডিশ গবেষকের

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা।
Posted on ১৪ জুলাই, ২০২২

মাংসাশী উদ্ভিদ মানুষের ইশারায় ধরবে পতঙ্গ। অবাক লাগলেও সত্যি। সম্প্রতি, ল্যাবরেটরিতে দূর-নিয়ন্ত্রিত মাংসাশী উদ্ভিদ-এর জন্ম দিলেন গবেষকরা। এই আশ্চর্য আবিষ্কারের নেপথ্যে রয়েছেন সুইডেনের লিনকোপিং বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সিমোনে ফ্যাবিয়ানো। দীর্ঘদিন ধরেই নিউরোন বা স্নায়ুকোষের ওপর গবেষণা চালিয়ে আসছেন সিমোনে। এমনকি বায়োইঞ্জিনিয়ারিং-এর মাধ্যমে জৈব স্নায়ুকোষের কৃত্রিম প্রতিস্থাপকও তৈরি করেছেন তিনি। এবার এই কৃত্রিম স্নায়ুকোষকেই কাজে লাগিয়ে দূর-নিয়ন্ত্রিত মাংসাশী উদ্ভিদের জন্ম দিলেন তিনি। সিমোনে বায়োনিক প্রস্থেটিক্সের সাহায্যে তৈরি করেছেন পোকা ধরার ফাঁদ। যা দেখতে অবিকল ভিনাস ফ্লাইট্র্যাপ-এর মতোই। স্ট্যান্ডার্ড পলিমার ও সিলিকন নির্মিত বিদ্যুৎ-পরিচালিত এই প্রস্থেটিক অঙ্গই তিনি সংযুক্ত করেছেন সাধারণ গাছের ডালের সঙ্গে। অন্যদিকে তাঁর তৈরি করা বিশেষ মেশিন ইন্টারফেসই গাছের মস্তিষ্কের কাজ করবে। সিমোনের তৈরি কৃত্রিম ফাঁদে কোনো পোকা বসলেই স্বল্পভোল্টেজ ব্যাটারির মাধ্যমে বৈদ্যুতিক পালস সরবরাহিত হবে মেশিন ইন্টারফেসে। এক সেকেন্ডেরও কয়েকশো ভাগ সময়ের মধ্যেই যন্ত্র থেকে নির্দেশ আসবে ফাঁদ বন্ধ করার। অর্থাৎ, সাধারণ মাংসাশী বা পতঙ্গভুক উদ্ভিদের থেকেও বেশি সংবেদনশীল ল্যাবরেটরিতে তৈরি এই গাছ। পাশাপাশি কতক্ষণ এই গাছ শিকার চালিয়ে যাবে, তাও রিমোটের মাধ্যমে দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারা সম্ভব। তবে পোকা-মাকড়ের উপদ্রব কমানোর জন্য এই গাছের নকশা তৈরি করেননি সিমোনে। তাঁর উদ্দেশ্য সম্পূর্ণ ভিন্ন। আসলে মানুষের ক্ষেত্রে প্রস্থেটিক অঙ্গ ব্যবহৃত হলেও, গাছের ক্ষেত্রে হয় না তেমনটা। সিমোনে বায়ো-ইঞ্জিনিয়ারিং-এর মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয় এবং দূর-নিয়ন্ত্রিত কৃত্রিম উদ্ভিদ-অঙ্গ তৈরি করতে চেয়েছিলেন। আর শেষ পর্যন্তও সফলও হলেন তিনি। সম্প্রতি, তাঁর এই গবেষণাকে স্বীকৃতি জানিয়েছে বিশ্বের প্রথম সারির বিজ্ঞান পত্রিকা নেচার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fourteen + 9 =