শতায়ু মানুষ, সুস্থ মানুষ

শতায়ু মানুষ, সুস্থ মানুষ

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১০ ডিসেম্বর, ২০২৪

একশো বছর বাঁচা একেবারে অসম্ভব নয়। চারপাশে তাকালে আমরা দু-চরজন শতায়ু মানুষের খবর পাই। কী তাঁদের “গোপন কথা”? এটা জানবার জন্য এখন শতায়ুদের দেহ থকে কোশ সংগ্রহ করে জমিয়ে রাখছেন বিজ্ঞানীরা। সেই ‘কোশ ব্যাঙ্ক’ মানুষের আয়ু সংক্রান্ত গবেষণার নতুন নতুন রসদের জোগান দিচ্ছে।
বস্টনের মাসাচুসেট্‌স-এর বিজ্ঞানীরা শতায়ুদের রক্ত থেকে স্টেম সেলগুলোকে নতুন করে প্রোগ্রাম করে নিয়ে কাজ করছেন। স্টেম সেল হল শরীরের সেইসব আদিকোশ যেগুলো নানা বিভিন্ন ধরনের কোশে বিভক্ত হওয়ার ক্ষমতা রাখে। এরা শরীর সারাইয়েরও কাজে করে। স্টেম সেল ‘নতুন করে প্রোগ্রাম করা’ মানে হল পূর্ণবয়স্ক কোশকে আবার সেই আদি অকৃত্রিম দশায় ফেরত নিয়ে যাওয়া। ল্যাবরেটরিতে কোনো রোগীর দেহ থেকে কোশ সংগ্রহ করে তার মধ্যে আণবিক উপাদান ঢুকিয়ে দিয়ে একাজ করা যায়। নতুন করে প্রোগ্রাম-করা এই স্টেম কোশগুলোকে নিয়ে বিভিন্ন ল্যবরেটিরির বিজ্ঞানীরা বুঝতে চাইছেন কী করলে মানুষ দীর্ঘ সুস্থ জীবন লাভ করতে পারে। খুবই কঠিন কাজ। তবে আশার কথা, এরই মধ্যে, মস্তিষ্ক কেন বুড়িয়ে যায় সে বিষয়ে কিছু অন্তর্দৃষ্টি লাভ করা সম্ভব হয়েছে।
শতায়ুদের নানান আঘাত, ধাক্কা থেকে আবার সুস্থ অবস্থায় ফিরে আসার একটা স্বাভাবিক ক্ষমতা থাকে। বস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক জর্জ মার্ফি জানিয়েহেন, তাঁর চেনা একজন শতায়ু ১৯১৭ সালের স্প্যানিশ ফ্লু আর ২০১৯ সালের কোভিড সংক্রমণ দুটোই সামলে বেঁচে উঠেছেন। এর একটা ব্যাখ্যা এই যে তাঁদের দেহে সম্ভবত এমন একটা জিনঘটিত সুরক্ষা-কাঠমো থাকে যা রোগের হাত থেকে তাঁদের বাঁচায়।
কিন্তু এ ব্যাখ্যা কতদূর ঠিক তা যাচিয়ে দেখা একটা দুঃসাধ্য ব্যাপার। শতায়ু মানুষের সংখ্যা বেশ কম। তাঁদের রক্তের আর ত্বকের নমুনা জোগাড় করা খুব সহজ কাজ নয়। এখান থেকেই কোশ-ব্যাঙ্ক বানানোর ভাবনা মাথায় আসে গবেষকদের। এরই মধ্যে অন্যান্য গবেষণাগারের গবেষকরা এ-কে স্বাগত জানিয়েছেন।
তবে এত সবের পরে মানুষ যদি বোমা ছুড়ে আর পরিবেশে কার্বন পাঠিয়ে নিজের সর্বনাশের পথ প্রশস্ত করে তাহলে অবশ্য অন্য কথা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

5 + 5 =