
আমাদের শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে ভেস্টিবুলার সিস্টেম। ভেস্টিবুলার সিস্টেম কানের অভ্যন্তরভাগের মধ্যে অবস্থিত অনেকগুলি অঙ্গের নেটওয়ার্ক। আমরা যা দেখি সেই দৃশ্য তথ্যাকারেএই নেটওয়ার্ক মারফত চোখ থেকে মস্তিষ্কে গিয়ে পৌঁছায়। যেকোনো ধরনের ছবি যা স্থির নয় তা আমাদের ভারসাম্যকে অনেক সময় নড়বড়ে করে দেয়, এটি আগেই প্রমাণিত। তবে নতুন গবেষণা বলছে, যাদের ভেস্টিবুলার সিস্টেমে ত্রুটি রয়েছে (হাইপো ফাংশন) তাদের ক্ষেত্রে অস্থির কোনো শব্দও এই ভারসাম্য রক্ষায় অনুরূপ ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। অতিরিক্ত কোলাহলপূর্ণ জায়গা, যেখানে অনেক দৃশ্যমান তথ্যর সাথে প্রচুর শব্দতথ্যও আমাদের মধ্যে প্রবেশ করে, সেখানে ভেস্টিবুলার হাইপো ফাংশনে ভোগা মানুষগুলির বেশ অসুবিধা হয়। মাথা ঘোরা, অল্পতেই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়া, বমিভাব, চোখে আবছা দেখা, এরকম নানান অসুবিধা হয়, এমনকি হাঁটতেও অসুবিধা হয়। গবেষণাটি ৬৯ জনের উপর প্রয়োগ করা হয়। এদের দুটি দলে ভাগ করা হয়। একটি দল সুস্থ, অপর দলটি ভেস্টিবুলার হাইপো ফাংশন দ্বারা আক্রান্ত। অংশগ্রহণকারীদের ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে কানে হেডফোন দিয়ে নিউইয়র্ক শহরের সাবওয়ের অভিজ্ঞতা অনুকরণ করানো হয়। স্থিরচিত্র, নীরব চিত্র, চলমান দৃশ্য, হোয়াইট নয়েজ, উচ্চকোলাহল যুক্ত শব্দ – সবকটিই মিলিয়ে মিশিয়ে ব্যবহার করা হয়। দেখা যায় , হইপো ফাংশন যুক্ত মানুষদের ভারসাম্য যথেষ্ট প্রভাবিত হয়েছে চিত্র এবং শব্দ বিশেষে। বিশেষত উচ্চকোলাহল বা হোয়াইট নয়েস যুক্ত চলমান দৃশ্য গুলির ক্ষেত্রে এই ভারসাম্যের বিচলন বেশি লক্ষ্য করা গেছে।
“শারীরিক থেরাপির সময় শব্দ সাধারণভাবে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান বলে বিবেচিত হয় না। কিন্তু যে কোনো মানুষের ভারসাম্য মূল্যায়ন করার ক্ষেত্রে, শব্দকে একটি বিশেষ উপাদান হিসেবে গুরুত্ব দেওয়া উচিত । ভারসাম্যের সমস্যার মূল্যায়ন ও চিকিৎসা উভয় ক্ষেত্রেই পোর্টেবল ভার্চুয়াল হেডসেট একটি আশাপ্রদ টুল হিসাবে সাহায্যকারী হতে পারে”- জানিয়েছেন নিউইয়র্ক এর স্টেইন হার্ট স্কুল অফ কালচার এডুকেশন এন্ড হিউম্যান ডেভেলপমেন্টের প্রফেসর এবং গবেষণার প্রধান অ্যানেট লুবেৎস্কি । গবেষণাটি প্লস ওয়ান পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।