
সায়েন্স পত্রিকায় প্রকাশিত একটি গবেষণায় হিলেল আভিয়েজার এবং তার সহকর্মীরা দেখিয়েছেন যে তীব্র আবেগমথিত অভিজ্ঞতাগুলি মুখের অভিব্যক্তির চেয়ে শরীরের ভাষার মাধ্যমে আরও সঠিকভাবে বোঝা যায়। গবেষকরা দেখেছেন যে তীব্র ব্যথা, আনন্দ, দুঃখ বা রাগের মতো চরম আবেগগুলির প্রকাশে মুখের অভিব্যক্তি প্রায়শ একই রকম দেখায়, ফলে শুধুমাত্র মুখ দেখে আবেগকে বোঝা কঠিন হয়ে ওঠে ।
পেশাদার টেনিস খেলোয়াড়দের ছবি নিয়ে একটা পরীক্ষা করা হয়েছিল। সে পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীরা শুধুমাত্র মুখের অভিব্যক্তি দেখে আবেগ সঠিকভাবে চিহ্নিত করতে গিয়ে সমস্যায় পড়েন, কিন্তু শরীরের ভাষা বা সম্পূর্ণ শরীরের ছবি দেখে সঠিকভাবে আবেগটিকে বুঝতে পেরেছেন। এমনকি বিজয়ী এবং পরাজিত খেলোয়াড়দের মুখের অভিব্যক্তির বদল হলেও অংশগ্রহণকারীরা শরীরের ভঙ্গি দেখেই আবেগ ঘটিত অবস্থা নির্ধারণ করেছেন। এছাড়াও, বিজয়ী বা পরাজিত চিহ্নিত করতে মুখের অভিব্যক্তির চেয়ে হাত মুষ্টিবদ্ধ বা খোলা থাকা বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
তবে অন্য একটি পরীক্ষায় দেখা গেছে যে ৮০% অংশগ্রহণকারী বিশ্বাস করেন যে তারা শুধুমাত্র মুখের অভিব্যক্তি দেখেই আবেগ বুঝতে পারেন। এ থেকে মুখের অভিব্যক্তির প্রতি মানুষের পক্ষপাতিত্ব এবং শরীরের ভাষার অবমূল্যায়নের বিষয়টি ফুটে ওঠে। আরও পরীক্ষায় দেখা গেছে, উচ্চ-তীব্রতা সম্পন্ন পরিস্থিতির (যেমন: অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া) ছবিগুলিতে শরীরের ভাষা ছাড়া শুধুমাত্র মুখের অভিব্যক্তি দেখে দর্শকরা সঠিকভাবে আবেগ বুঝতে পারেননি।
এই গবেষণার ফলাফলগুলি সেইসব ব্যক্তিদের সাহায্য করতে পারে যারা মুখের অভিব্যক্তি বুঝতে অসুবিধা অনুভব করেন। আভিয়েজার বলেন, “আবেগ বোঝার শিক্ষা দিতে গেলে আমাদের শুধুমাত্র মুখের দিকে নয়, আগে পরিবেশ, শরীরের ভাষা এবং তারপর মুখের অভিব্যক্তির দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত।”