শান্ত করার জন্য ‘ডিজিটাল প্যাসিফায়ার’ বাচ্চাদের আবেগ নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ করে

শান্ত করার জন্য ‘ডিজিটাল প্যাসিফায়ার’ বাচ্চাদের আবেগ নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ করে

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৩ জুলাই, ২০২৪
বাচ্চাদের আবেগ নিয়ন্ত্রণে

শিশুদের ভোলাতে আমরা এখন মোবাইল ধরিয়ে দিতে অভ্যস্ত। তাদের বায়না, কান্না থেমে যায় আর আমরাও নিজেদের কাজে মন দিই। গবেষকদের বক্তব্য “ডিজিটাল প্যাসিফায়ার” হিসাবে কাজ করে এমন ডিজিটাল ডিভাইসগুলি বাচ্চাদের দেওয়া হলে তা তাৎক্ষণিক তাদের রাগ, বায়না এড়াতে কাজ করে। কিন্তু পরবর্তীতে শিশুদের রাগ পরিচালনার দক্ষতা প্রভাবিত হয়। তারা দেখেছেন যে বাচ্চারা ক্ষেপে গেলে তাদের নিয়মিত ডিজিটাল ডিভাইস দেওয়া হলে পরে তাদের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে আরও সমস্যা হয়। হাঙ্গেরি এবং কানাডার গবেষকদের একটা দল তদন্ত করেছেন এই কৌশল, যাকে পিতামাতার ডিজিটাল আবেগ নিয়ন্ত্রণ হিসাবে উল্লেখ করা হয়, পরবর্তী জীবনে শিশুদের আবেগকে কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনা, যা শিশুদের অক্ষমতার দিকে নিয়ে যায়। এই ফলাফল ফ্রন্টিয়ার্স ইন চাইল্ড অ্যান্ড অ্যাডোলেসেন্ট সাইকিয়াট্রি-তে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষকরা শিশুদের নেতিবাচক আবেগ অনুভব করার গুরুত্ব এবং প্রক্রিয়াটিতে পিতামাতাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার ওপর জোর দিয়েছেন। শিশুরা তাদের জীবনের প্রথম কয়েক বছরে স্ব-নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে অনেক কিছু শেখে, কিছু নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে আবেগজনিত, মানসিক ও আচরণগত প্রতিক্রিয়া দেখাতে শেখে। এই আচরণগুলোর মধ্যে কিছু আচরণ স্বয়ংক্রিয় হওয়ার পরিবর্তে শিশুদের নিজের ক্ষমতায় ইচ্ছাকৃত নিয়ন্ত্রিত প্রতিক্রিয়া হয়। এটা শিশু পরিবেশ থেকে মূলত তার বাবা-মায়ের সাথে সম্পর্কের মাধ্যমে শেখে।
ডক্টর ভেরোনিকা কনক, ইয়োটওস লরান্ড ইউনিভার্সিটি -এর গবেষক বলেছেন, বাবা-মায়েরা যদি তাদের সন্তানকে শান্ত করার জন্য বা ক্রোধ কমানোর জন্য নিয়মিত ডিজিটাল ডিভাইস দিতে থাকেন, তাহলে শিশু তাদের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে শিখবে না। তিনি বলেছেন এটা পরবর্তী জীবনে আরও গুরুতর আবেগ-নিয়ন্ত্রণ সমস্যাগুলোর দিকে পরিচালিত করবে, বিশেষ করে, রাগ ব্যবস্থাপনায় সমস্যা তৈরি হবে। শিশুদের নেতিবাচক আবেগগুলি কীভাবে পরিচালনা করতে হয় তা শিখতে হবে৷ এই শেখার প্রক্রিয়ার সময় তাদের পিতামাতার সাহায্য প্রয়োজন, ডিজিটাল ডিভাইসের সাহায্য নয়। গবেষকরা উল্লেখ করেছেন হতাশাজনক পরিস্থিতির মোকাবিলা করা শিশুর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বরং বাবা-মায়েদের তাদের সন্তানদের কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রশিক্ষণ দিতে হবে, তাদের আবেগ চিনতে ও তা পরিচালনা করতে সাহায্য করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

1 × 5 =