শুরু হবে শুকতারায় যাওয়ার বেসরকারি মহাকাশ অভিযান

শুরু হবে শুকতারায় যাওয়ার বেসরকারি মহাকাশ অভিযান

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২

সৌরজগতের অন্যতম গ্রহ হল শুক্র, ইংরাজিতে ভেনাস। এই গ্রহে কি প্রাণ আছে? বিজ্ঞানীরা বলছেন, বহু যুগ আছে শুক্রগ্রহে সমুদ্র ছিল। তাপমাত্রাও ঘোরাফেরা করত ২০ থেকে ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চলতি দশকের শেষদিকে এই সন্ধ্যাতারা দিকেই ছুটবে মনুষ্যহীন এক মহাকাশযান। নাসা আর ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির যৌথ উদ্যোগে এই অভিযান শুরু হতে চলেছে।

এদিকে ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজির বিজ্ঞানীরাও পিছিয়ে নেই। রকেট ল্যাব নামক সংস্থার সাথে গাঁটছড়া বেঁধে ওনারাও পরের বছর মে মাস নাগাদ শুক্র গ্রহে মহাকাশযান পাঠাতে চাইছেন। মনে করা যাক প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহের কথা, অথবা স্কাইল্যাবের মতো প্লাটফর্ম কিংবা আরও দূর মহাকাশে অভিযান। বিগত ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে উন্নত দেশগুলোর সরকার ও গবেষণা কেন্দ্রগুলো মহাকাশের রহস্য উন্মোচনে অনেকটাই সফল হয়েছে। কিন্তু যুগ পাল্টেছে, পৃথিবীর বাইরের আকাশ নিয়ে বাণিজ্যিক আগ্রহও বেড়েছে।

২০২০ সালের গবেষণা বলছে, শুকতারার ভেতরে মেঘের স্তরে স্তরে ফসফিন গ্যাসের খোঁজ মিলেছে। এই ফসফিন মূলত জীবদেহ থেকেই তৈরি হয়। ম্যাসাচুসেটসের বিজ্ঞানী শ্রীমতী সারা সিগার এবং ওনার দল মনে করছেন ভালো সুযোগ আছে শুক্র অভিযানের। রকেট ল্যাব প্রতিষ্ঠানের তৈরি করা ইলেকট্রন লঞ্চ ভেহিকেল আর ফোটন স্পেসক্রাফট এই অভিযানের জন্য একেবারে যোগ্য সঙ্গী।

ইলেকট্রন রকেট মাত্র ১৮ মিটার লম্বা। কিন্তু ফোটন স্পেসক্রাফট বা অন্য ছোট আকারের মহাকাশযানকে অনায়াসে পৃথিবী থেকে ১৬৫ কিলোমিটার দূরের কক্ষপথে ঠেলে নিয়ে যেতে পারে। ফোটন রকেটের উপরের অংশটা তারপর আলাদা হয়ে পাড়ি জমাতে পারে শুকতারার দিকে।

শুক্রগ্রহের আবহমণ্ডল যদিও একেবারেই নচ্ছাড়, কিন্তু মেঘ কেটে যাওয়ার সময় ফোটন রকেট নানান তথ্য সংগ্রহ করতে পারবে। সরাসরি ফসফিন গ্যাস শনাক্ত না করতে পারলেও, রকেটে রয়েছে নেফ্লোমিটার নামের এক খুদে যন্ত্র। প্রতিপ্রভা সৃষ্টি করতে পারে এমন যে কোনও পদার্থের উপস্থিতি ধরে ফেলা যাবে।

শ্রীমতী সিগার জানিয়েছেন, শুক্র অভিযানে বড়জোর পাঁচ মাস সময় লাগবে। অর্থাৎ কোনও বাণিজ্যিক সংস্থা চাইলে ২০২৩ সালের অক্টোবর মাস নাগাদ শুরু করে দিতে পারে শুক্রগ্রহের পরিমণ্ডল নিয়ে ছানবিন।