নীল নয়, টকটকে লাল রঙে রাঙা হয়ে উঠেছে সমুদ্রের জল। সমুদ্রতটজুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে অসংখ্য ডলফিনের মৃতদেহ। কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা দুর্ঘটনা নয়। হারপুন দিয়ে নৃশংসভাবে গেঁথে মারা হয়েছে তাদের। এই দৃশ্য সাম্প্রতিক নয়। ৮০০ বছর ধরে চলে আসছে। ফ্যারো দ্বীপপুঞ্জে সেই সময় বসতিস্থাপন করা ভাইকিংরা শুরু করেছিল ডলফিন আর তিমি হত্যা। গ্রীষ্মকালে আয়োজিত হয় বার্ষিক তিমি শিকার উৎসব। তখন ফ্যারো দীপপুঞ্জের ছবিটা ভয়াবহ হয়ে ওঠে। এই নিয়ে বহুবছর ধরেই তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন বিশ্বের পরিবেশকর্মী, প্রাণী অধিকারকর্মী এবং বিজ্ঞানীরা। কিন্তু ডেনমার্কের অধীনে থাকা ১৮টি দ্বীপ নিয়ে তৈরি স্বশাসিত ফ্যারো দ্বীপপুঞ্জের প্রশাসকরা তিমি ও ডলফিন শিকারের ওপর ডেনমার্কের নিষেধাজ্ঞাকে তোয়াক্কা না করে দিব্যি এই প্রাণীহত্যাকে পৃষ্ঠপোষকতা করে যাচ্ছে!
সমুদ্র সংরক্ষণ গোষ্ঠী সি শেফার্ডের রিপোর্ট অনুযায়ী, চলতি বছরেও শিকার করা হয়েছে ১৪২৮টি বিরল আটলান্টিক হোয়াইট-সাইডেড ডলফিন। যা মূলত পাওয়া যায় ফ্যারো ও আইসল্যান্ড সংলগ্ন অঞ্চলেই। প্রাণীবিদ ও পরিবেশকর্মীরা প্রতিবাদ জানালেও ফ্যারো সরকারের সাফাই, ডলফিন ও তিমি শিকার নাকি কমিয়ে আনছে কার্বন ফুটপ্রিন্ট! পাশাপাশি তিমির মাংস ও ব্লাবার ফ্যারোর ঐতিহ্যবাহী খাদ্য। শিকার বন্ধ হলে টান পড়বে ভাঁড়ারে। সেইসঙ্গে সরকারের দাবি, ফ্যারো সংলগ্ন সমুদ্রে এই প্রজাতির প্রায় ৮০ হাজার ডলফিন রয়েছে। তার মধ্যে বছরে ১৪০০টি ডলফিন শিকার করলে, তফাৎ হবে না কিছুই।