সাবানের মাধ্যমে ত্বকের ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য একজন বালক পুরস্কার পেল

সাবানের মাধ্যমে ত্বকের ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য একজন বালক পুরস্কার পেল

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা‌
Posted on ১৫ নভেম্বর, ২০২৩

১৪ বছর বয়সী এক মার্কিন বালক বিজ্ঞানী একটি সাবান তৈরি করেছে যাতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দিয়ে ত্বকের ক্যান্সার ‘ধুয়ে ফেলতে’ পারা যাবে। অভিনব সাবান তৈরির জন্য এই বালক বিজ্ঞানী, হেম্যান বেকেল ইয়াং সায়েন্টিস্টস চ্যালেঞ্জে শীর্ষ পুরষ্কার জিতেছে। ইয়াং সায়েন্টিস্টস চ্যালেঞ্জ এমন একটি বার্ষিক প্রতিযোগিতা যেখানে লক্ষ শিশু এবং কিশোর-কিশোরীদের দৈনন্দিন সমস্যার সমাধান উদ্ভাবনে উৎসাহিত করা হয়। প্রতিযোগিতাটি ইউএস-ভিত্তিক বহুজাতিক 3M কোম্পানি দ্বারা পরিচালিত হয়, যা ১৯৭০ এবং ৮০- এর দশকে N95 মাস্ক তৈরি এবং পেটেন্ট নেওয়ার জন্য পরিচিত।
হেম্যান বেকেল তার পরিবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার আগে চার বছর ইথিওপিয়ায় বসবাস করেছিল, তখন সে দিনের বেলায় গরমে সূর্যালোকে সারাদিন লোকেদের কাজ করতে দেখত। এই স্মৃতি তার ক্যান্সার নিয়ে কাজকে অনুপ্রাণিত করেছিল, এই সাবান উদ্ভাবন নিয়ে তার আশা যে ভবিষ্যতে একদিন এটি সাশ্রয়ী এবং কার্যকর হবে। যদি এটি আশানুরূপ কাজ করে এবং একটি নিরাপদ চিকিৎসা পদ্ধতি হিসেবে প্রমাণিত হয়, তবে বর্তমানের ব্যয়বহুল স্কিন ক্যান্সারের চিকিৎসার খরচ যা প্রায় ৪০,০০০ আমেরিকান ডলার, তা বহন করতে অক্ষম ব্যক্তিদের জন্য এটি একটি বড়ো পার্থক্য আনতে পারবে।
ইয়াং সায়েন্টিস্টস চ্যালেঞ্জে ফাইনালিস্ট হওয়ার পর; হেম্যান বাড়িতে সাবান নিয়ে কাজের সময়, সে এবিষয়ে ডেবোরা ইসাবেল, যিনি 3M-এর একজন পণ্য প্রকৌশলী; এবং ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এবং জর্জটাউন ইউনিভার্সিটির কাছে সাহায্য নিয়েছিল। এই কাজে জড়িত প্রধান যৌগ হল ইমিডাজোকুইনোলিন, যা আঁচিল, ছত্রাক সংক্রমণ এবং ব্রণের মতো অবস্থার জন্য একটি সাময়িক চিকিৎসা হিসাবে ব্যবহৃত হয়। এফডিএ এটিকে বেসাল সেল কার্সিনোমা, অর্থাৎ হেম্যান যেধরনের ত্বকের ক্যান্সারের জন্য কাজ করছে তা চিকিৎসার জন্যও অনুমোদন দিয়েছে। হেম্যানের সাবান ত্বকের মাধ্যমে ওষুধ সরবরাহ করে যা ক্যান্সার কোশের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সক্রিয় করে। সাধারণত সাবান জিনিসকে ধুয়ে ফেলে, তবে হেম্যানের সাবানে একটি অতিরিক্ত উপাদান রয়েছে তাই ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করার যৌগগুলি ধুয়ে ফেলার পরে দীর্ঘ সময় ধরে লেগে থাকে। হেম্যান ব্যাখ্যা করেছেন, এটি সাধারণ সাবানের চেয়ে কিছুটা আঠালো কারণ এতে এই লিপিড-ভিত্তিক ন্যানো পার্টিকেল রয়েছে এবং মূল বিষয়টি হল যে কোনো ব্যক্তি একবার সাবান ধুয়ে ফেললেও, ওষুধের অংশগুলি তার ত্বকে থাকবে। হেম্যান আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে এ বিষয়ে মানব পরীক্ষা এবং এফডিএ শংসাপত্রের অনুমোদন পাওয়ার আশা করছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 × three =