নয়া ডিএনএ বিশ্লেষণ পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। বিজ্ঞানীরা খুঁজে পেলেন ডজনের বেশি জিন, স্রিজোফ্রেনিয়ার সাথে রয়েছে যাদের গভীর সম্পর্ক। ভবিষ্যতে স্রিজোফ্রেনিয়া রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে ব্যাপক অবদান রাখবে এই আবিষ্কার, আশা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
কাকে বলে স্রিজোফ্রেনিয়া? এটি পরিচিত মনের জটিল একটি অসুখ হিসেবে। স্রিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত রোগীরা বাস করেন হ্যালুসিনেশন, বিভ্রম ও যুক্তিহীনতার জগতে। বর্তমান পৃথিবীতে মানবজাতির প্রায় ১ শতাংশ- ৫ কোটিরও বেশি মানুষ- ভুগছেন এই রোগে। এই রোগের প্রকৃত কারণ বুঝে ওঠা এখনও দুঃসাধ্য; আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞান স্রিজোফ্রেনিয়া-র বাহ্যিক উপসর্গগুলি চাপা দিতে পারলেও রোগটি নির্মূল করতে অক্ষম। অনলাইন জার্নাল নেচার-এ প্রকাশিত এই গবেষণাটি স্রিজোফ্রেনিয়া নিয়ে দেখিয়েছে নতুন দিশা।
এতদিনে চিকিৎসকরা জানেন, স্রিজোফ্রেনিয়া একটি জিনগত রোগ, বংশানুক্রমে এটি সঞ্চারিত হয়। ২০১৪ সালে প্রকাশিত স্রিজোফ্রেনিয়া রোগীদের নিয়ে একটি গবেষণা দেখিয়েছিল, মানব-জিনোমের ডিএনএ বৈচিত্র্যের সাথে এই রোগটি সম্পর্কিত। বর্তমান গবেষণাটিতে বিজ্ঞানী ড্যানিয়েল জেসউইন্ড (ইউসিএলএ-র সাইকায়াট্রি ও নিউরোলজি বিভাগের প্রফেসর) ব্যবহার করেছিলেন ‘ক্রোমোজোম কনফর্মেশন ক্যাপচার’ নামে একটি প্রযুক্তি। ২০১৪ সালের গবেষণার জের-ধরে-চালানো এই নতুন পরীক্ষাটিতে চিহ্নিত করা গেছে কয়েকশো জিন- যেগুলির বিন্যাস অস্বাভাবিক- স্রিজোফ্রেনিয়া রোগের ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা রয়েছে। দু ডজন জিন বিশ্লেষণ করে মিলেছে আরো তথ্য, যা আক্রান্ত জিনের অস্বাভাবিক বিন্যাসের ব্যাপারে জুগিয়েছে প্রমাণ।
‘গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য আমাদের স্রিজোফ্রেনিয়া রোগটি সম্পর্কে আরো বিশদে জানাবে। পাশাপাশি আমরা আরো একটি পরিকল্পনা নিচ্ছি যাতে এই একই পদ্ধতি অবলম্বন করে আমরা অটিজম ও অন্যান্য স্নায়বিক রোগগুলির পেছনে থাকা মূল জিনগুলিকে চিহ্নিত করতে পারি’, বলছেন জেসউইন্ড।