২০২৪-এর ইনফোসিস পুরস্কার

২০২৪-এর ইনফোসিস পুরস্কার

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৪

ইনফোসিস সায়েন্স ফাউন্ডেশন-এর দেওয়া বার্ষিক ইনফোসিস পুরস্কার ভারতের একটি অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ বিজ্ঞান পুরস্কার। ভারতীয় অথবা জন্মসূত্রে ভারতীয় তরুণ বিজ্ঞানীদের মৌলিক গবেষণার স্বীকৃতি স্বরূপ এই পুরস্কার দেওয়া হয়। পুরস্কার প্রাপকদের হাতে তুলে দেওয়া হয় একটি মানপত্র, একটি স্বর্ণপদক ও এক লক্ষ মার্কিন ডলার। ২০০৮ সাল থেকে এই পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে।
২০১৪ সালে এ পুরস্কার পেয়েছেন:
গণিতে নিনা গুপ্তা
জারিস্কি ক্যানসেলেশন প্রব্লেম নামক একটি পুরোনো গাণিতিক সমস্যার সমাধানের জন্য তিনি এই পুরস্কার পেলেন। ১৯৪৯ সালে প্রসিদ্ধ গণিতজ্ঞ অস্কার জারিস্কি এই সমস্যাটি উত্থাপন করেছিলেন। ২০১৪ সালে অধ্যাপক নিনা গুপ্তা এর সমাধান বার করে জগৎপ্রসিদ্ধ হন। তাত্ত্বিক গণিতে এটি একটি মহামূল্যবান মৌলিক কীর্তি বলে গণ্য। তিনি কলকাতার ইন্ডিয়ান স্ট্যাস্টিকাল ইন্সটিটিউটের তাত্ত্বিক রাশিবিজ্ঞান ও গণিত বিভাগের অধ্যাপক। ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিকাল ইন্সটিটিউট থেকে ২০১২ সালে পি-এইচ ডি করেন। এর আগেও তিনি ভারতের বহু মর্যাদাবান পুরস্কার পেয়েছেন। ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে তিনি আমেরিকান ম্যাথমেটিকাল সোসাইটির বার্ষিক অধিবেশনে বক্তৃতা দেওয়ার জন্য নিমন্ত্রিত হয়েছেন।
ভৌত বিজ্ঞানে বেদিকা খেমানি
কোয়ান্টাম পদার্থবিজ্ঞানে সময়-কেলাস (টাইম ক্রিস্টাল) একটি অত্যন্ত দুরূহ বিষয়। এই ক্ষেত্রে নতুন পথ দেখিয়েছেন অধ্যাপক খেমানি। তিনি বর্তমানে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক। ২০১৬ সালে তিনি প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অধ্যাপক শিবাজী সোন্ধির অধীনে পি-এইচ ডি করেন। এরপর কিছুদিন হার্ভার্ডে কাজ করে স্টানফোর্ডে যোগ দেন। তিনি পৃথিবীর বহু শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানে তাঁর বিষয় নিয়ে বক্তৃতা দিয়েছেন।
জীবনবিজ্ঞানে সিদ্ধেশ কামাত
জৈব সক্রিয় লিপিড এবং তাদের গ্রাহী (রিসেপ্টর) নিয়ে, তাদের বিপাকীয় এবং সংকেত-প্রদানের পথরেখাগুলি কীভাবে কাজ করে সে বিষয়ে কতকগুলি অত্যন্ত মূল্যবান আবিষ্কারের জন্য তিনি এই পুরস্কার পেলেন। নানা ধরনের কোশ কীভাবে কাজ করে তা বোঝার ব্যাপারে এবং মানুষের অনেক রোগের ব্যাপারে তাঁর এই আবিষ্কারগুলি বিশেষ কাজে লাগবে। সিদ্ধেশ কামাত পুণের ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অব সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (আইজার)-এর এসোশিয়েট প্রফেসর। টেক্সাসের এ অ্যান্ড এম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পি-এইচ ডি করে তিনি আইসার-এ যোগ দেন। এর আগেও দেশে ও বিদেশে তিনি বহু মর্যাদাবান সম্মানে ভূষিত হয়েছেন।
ইঞ্জিনিয়ারিং ও কম্পিউটার সায়েন্সে শ্যাম গোলাকোটা
অল্প খরচে স্মার্ট ফোন-ভিত্তিক চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যঘটিত পরামর্শ দেওয়ার উপযোগী ব্যবস্থা, বিনা-ব্যাটারিতে কম্পিউটিং ও বার্তাজ্ঞাপন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে মানুষের শ্রবণ-বোধ বাড়ানো প্রভৃতি বিষয়ে মূল্যবান গবেষণার জন্য অধ্যাপক গোলাকোটাকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। তিনি আই আই টি ম্যাড্রাস থেকে স্নাতক হয়ে মাসাচুসেট্‌স ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি থেকে পি-এইচ ডি করেন। অধ্যাপক গোলাকোটা ওয়াশিংটন রিসার্চ ফাউন্ডেশনের এবং টমাস জে কেব্‌ল এনডাউড প্রফেসর। ওয়াশিংটনের পল জি অ্যালেন স্কুল অব কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং-এর মোবাইল ইন্টেলিজেন্স ল্যাব-এর পরিচালক। পৃথিবীর বহু বিখ্যাত পুরস্কারে তিনি ভূষিত হয়েছেন।