একটি পাথরের স্তরে একই সাথে রয়েছে পোকা, মাছ, এবং জলজ উদ্ভিদের ফসিল। সম্প্রতি এমনই চমকপ্রদ ফসিল আবিষ্কার করেছেন সিডনির ‘অস্ট্রেলিয়ান মিউজিয়াম রিসার্চ ইনস্টিটিউটে’র জীবাশ্মবিদ ম্যাথু ম্যাকারি এবং তার সহযোগী দল। পাওয়া গেছে অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস-এ। সংশ্লিষ্ট গবেষণা পত্রটি গত ৭ জানুয়ারি ২০২২ এ ‘সায়েন্স অ্যাডভান্স’ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
যে অঞ্চলে ফসিল পাওয়া গেছে সেটি আদ্র অঞ্চল। অতীতে বৃষ্টিঅরণ্য অঞ্চল ছিল। আনুমানিক ২ কোটি ৩০ লক্ষ থেলে ৫০ লক্ষ বছর আগে মিওসিন যুগে পৃথিবীর জলবায়ু বিপর্যয়ের কারণে অস্ট্রেলিয়া শুষ্কভূমিতে পরিণত হয়। নিউ সাউথ ওয়েলস এর যে অঞ্চলে ফসিলটি পাওয়া গেছে সেই ম্যাগ্রাথ ফ্ল্যাট এই পরিবর্তনের সময়ই সৃষ্টি হয়, আনুমানিক – ১কোটি ৬০ লক্ষ থেকে ১কোটি ১০ লক্ষ বছর আগে। ফসিল বিশ্লেষণ করে জানা গেছে সৃষ্টির সময় ম্যাগ্রাথ ফ্ল্যাটে ছিল নাতিশীতোষ্ণ বনভূমি এবং ছোট হ্রদও।
ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপির মাধ্যমে ম্যাকারিদের প্রাপ্ত ফসিলের সফ্ট টিস্যুর ছবি বিষ্ময়কর তথ্যপ্রমাণ উপস্থিত করেছে। যেমন- ক্রেন ফ্লাই বা একরকমের মাছির জটিল গঠনের চোখ, কিংবা মাছের পেটে আটকে থাকা ডাঁশ মাছি। গোয়েথাইট এর স্তরের মধ্যে ফসিলিভূত হয়েছিল ফসিলটি। গোয়েথাইট আসলে আইরন হাইড্রক্সাইড খনিজ। ব্যালস্ট শিলা স্তরে অ্যাসিড যুক্ত জল চুঁইয়ে যাওয়ার ফলে এই ধাতব লোহা পৃথক হয়ে পরে অক্সিডাইজ হয়ে গোয়েথাইট খনিজটির সৃষ্টি হয়। এবং এই গোয়েথাইটই জলজ উদ্ভিদ পোকামাকড়, মাছ সবকিছুকে চেপে দিয়ে সৃষ্টি করেছে ফসিল। ম্যাকারি বলেন, গবেষণার আগে আমরা ভাবতেই পারিনি এই ধরণের শিলায় ফসিল এত ভালো ভাবে সংরক্ষিত হতে পারে।