আইইডি ধরতে নয়া ফিকির

আইইডি ধরতে নয়া ফিকির

ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস বা সংক্ষেপে আইইডি। এই বিস্ফোরক ঘুম কেড়ে নিয়েছে পৃথিবীর বহু দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় থাকা অফিসারদের। বিমানে, জাহাজে, বাসে, ট্রেনে কখন যে কে নিজের ব্যাগে বা পকেটে এই হালকা ছোট মারণাস্ত্র নিয়ে ঘুরছে তা বোঝা ভার। যদিও আইইডি শনাক্ত করার কিছু চালু পদ্ধতি রয়েছে।
এই আইইডি তৈরিতে উগ্রপন্থীরা প্রায়শই ‘অরগানিক পারঅক্সাইড এক্সপ্লোসিভ’ বা সংক্ষেপে ওপিই ব্যবহার করে এখন। হাতের কাছে থাকা নানা উপাদান দিয়ে সহজেই এই ধরণের বিস্ফোরক বানানো যায়। এমনকি একটা সাধারণ রান্নাঘরেও এই কাজটা সারা যায়। ২০১৫ সালে প্যারিসে, ২০১৬-তে ব্রাসেলসে, তার পরের বছর ম্যানচেস্টারে কিংবা ২০১৯ সালে শ্রীলঙ্কার বিস্ফোরণে এই অরগানিক পারঅক্সাইড এক্সপ্লোসিভের ব্যবহার হয়েছিল।
যারা এই ধরণের বিস্ফোরক বহন করে নিয়ে যায়, তাদের ত্বকে অতি সামান্য পরিমাণ হলেও ওপিই-র নমুনা থাকে। সোয়াবের সাহায্যে পরীক্ষায় প্রমাণ মিলতে পারে। এই পদ্ধতিতেই বিভিন্ন বিমানবন্দরে নজরদারি চালানো হয়।
সম্প্রতি ‘অ্যানালিটিকা কিমিয়া অ্যাক্টা’ পত্রিকায় অস্ট্রেলিয়ার বিজ্ঞানীরা এক নতুন পদ্ধতি প্রস্তাব করলেন। হাইড্রোজেন পারঅক্সাইডের জন্য যে সমস্যা হত সেটার সমাধান মিলেছে। মেলবোর্নের ভিক্টোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ডঃ পারভেজ মাহবুব গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন। কেমিলুমিনেসেন্স নামক প্রাকৃতিক ঘটনার সাহায্য নেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, কিছু বিশেষ রাসায়নিকের সাথে বিক্রিয়ায় কোনও কোনও অণু আলোকিত হয়ে ওঠে। ত্বকের নমুনাসহ সোয়াবকে যদি অল্প পরিমাণ সালফিউরিক অ্যাসিডের সংস্পর্শে আনা হয় তাহলে হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড দূর হয়। তারপর ওপিই-র মধ্যে বিস্ফোরক পদার্থের অণু সহজেই কেমিলুমিনেসেন্স পদ্ধতিতে শনাক্ত করা যেতে পারে।
ডঃ মাহবুব বলছেন, মাত্র ১৫ সেকেন্ডের পরীক্ষাতেই ফলাফল মিলবে। তাই চালু পদ্ধতির চেয়ে এই নতুন উপায় বেশি দ্রুত কাজ করবে।