আদিম মানব ‘নিয়েনডার্থাল’রা প্রায় খালি হাতে শিকারী পাখি ধরতো। কীভাবে? মূলত রাত্রে শিকারী পাখির বিশ্রামের সুযোগ নিয়েই এমন ফাঁদ তৈরি করতো আদিম মানব, যে ফাঁদ থেকে বেরোনো মুশকিল হতো পাখির। আর সেই সুযোগেই আদিম মানব ধরতো শিকারী হিংস্র পাখি। স্পেনের ন্যাশানাল রিসার্চ কাউন্সিলের নতুন গবেষণা শিকারী পাখি শিকারের এমনই ইঙ্গিত দিচ্ছে।
স্পেনের সেলভিয়ায় ঐ রিসার্চ কাউন্সিলের ডানানা বায়োলজিকাল স্টেশনের পক্ষীবিদ জুয়ান নিগ্রো এবং তাঁর দল একটি অভিনব পরীক্ষার মাধ্যমে আদিম মানবের পাখি শিকারের বিশেষ পদ্ধতির ইঙ্গিত পেয়েছেন। স্পেনের বিভিন্ন গুহায় যেখানে একরকমের কাকজাতীয় পাখি থাকে ( বিজ্ঞান সম্মত নাম- পাইরোকোরক্স পাইরোকোরক্স)। কালো রঙের মাথা ও লম্বা ধারালো লাল ঠোঁটযুক্ত এই পাখি শিকারের জন্যে দিনের বেলা বহুদূর যায়, কিন্তু রাত্রে নির্দিষ্ট স্থানে বাসায় ফিরে এসে বিশ্রাম নেয়।
নিয়েনডার্থালরা যে গুহা গুলো বারংবার যেত বলে আগেই প্রত্নতাত্ত্বিক পরীক্ষায় আবিষ্কার হয়েছিলো, সেই গুহাতেই ঐ শিকারী কাক জাতীয় পাখির হাড়, দাঁতের খাঁজ পাওয়া যায়। এই সমস্ত প্রমাণ আদিম মানবের কৌশলে শিকারী পাখি ধরার কথা জানান দিচ্ছিলো।
পাখিদের রাতের বিশ্রামের সুযোগেই কিছু সাধারণ অস্ত্র যেমন জাল, টর্চ লাইট ইত্যাদি ব্যবহার করে নিগ্রো ও তাঁর দল গুহার মধ্যে থেকে ধরেন শিকারী পাখি চৌঘ। সাড়ে পাঁচ হাজার পাখি ধরে গবেষক দলটি। গবেষক দল বিশ্রামরত পাখিদের ধরার জন্যে এমনই নিঃশব্দ শিকারের ব্যবস্থা করেন যে শিকারী ঐ পাখিরা প্রায় ডেড এন্ড এ পড়ে গেছিল। তবে প্রত্যাশিত ভাবেই পাখিগুলিতে আঘাতহীন ভাবে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
যদিও প্রকৃতপক্ষে ঠিক কীভাবে কী কী প্রাচীন অস্ত্র ব্যবহার করে নিয়েনডার্থালরা পাখি শিকার করতো তা অজানাই। তবে এই পরীক্ষা প্রায় খালি হাতেও ঠিক কীভাবে শিকারী পাখি ধরা সম্ভব হতো আদিম মানবের কাছে সে ব্যপারে একটা ইঙ্গিত দিয়েছে।