আর্কটিক হিমবাহে বরফ গলে পুকুর তৈরি হয়েছে- জানিয়েছে নাসা

আর্কটিক হিমবাহে বরফ গলে পুকুর তৈরি হয়েছে- জানিয়েছে নাসা

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৩০ অক্টোবর, ২০২৪

দীর্ঘ কয়েক দশক ধরেই পৃথিবীর এই পরিবর্তন দেখতে পাচ্ছিলেন বিজ্ঞানীরা। তবে আগে যা ছিল স্তিমিত, ধীর গতি, এখন সেই পরিবর্তন ঘটছে দ্রুত গতিতে। কারণ অবশ্যই বিশ্ব উষ্ণায়ন। ঘটনাটি আজকের নয়। ২০১৪ সালে নাসার উপগ্রহ চিত্র থেকে দেখা গেছে আলাস্কা অঞ্চলের হিমবাহের উপর অবস্থিত একটি অস্বাভাবিক বড়ো এবং গভীর নীল জলরাশি। বিজ্ঞানীদের মতে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আর্কটিক অঞ্চল জুড়ে অনুরূপ গলিত জলরাশি আজ খুবই সাধারণ হয়ে উঠছে এবং এই অঞ্চলটি যে হারে বরফ হারাচ্ছে তা আরও ত্বরান্বিত করছে। বিজ্ঞানীরা এর নামকরণ করেছেন মেল্ট পণ্ড বা পুকুর। নাসার এই ছবিতে দেখা গেছে পুকুরটি, ছোটো ছোটো অজস্র হিমশৈলে ভরা। পুকুরটি প্রায় ২৩০০ ফুট চওড়া। পুকুরের নীলরাশি দেখলে মনে হয় যে মেল্ট পণ্ডগুলো অনেক গভীর তবে ২০২২ সালের একটি অধ্যয়নে জানা গেছে এটি একটি ভ্রম। এর কারণ জলের তলার বরফ। অধ্যয়নে জানা গেছে পুকুরগুলো গড়ে প্রায় ৯ ইঞ্চি গভীর। তবে এই পুকুরটি ঠিক কতটা গভীর তা স্পষ্ট নয়। সাধারণত এই ধরনের মেল্ট পণ্ড গুচ্ছ করে অবস্থিত থাকে তবে এই পুকুরটি বিচ্ছিন্নভাবে এত বড়ো হওয়ার কারণ আজ স্পষ্ট নয়। বিজ্ঞানীরা ব্যাখ্যা করেন এই ধরনের মেল্ট পণ্ড বসন্তের শেষের দিকে এবং গ্রীষ্মের শুরুতে তৈরি হয় কারণ উষ্ণ আবহাওয়ায় বরফ গলে যায় এবং বরফের চাঁইয়ের মাঝে জমা জল পুকুর তৈরি করে। এই বৈশিষ্ট্য আর্কটিক অঞ্চলে দেখা গেলেও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এগুলো অনেক বেশি প্রকট হয়ে উঠেছে। পুকুরের সংখ্যা বৃদ্ধির হার গবেষকদের উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে কারণ গাঢ় নীল পুকুরগুলো তুষার এবং বরফের চেয়ে অনেক বেশি সূর্যালোক শোষণ করে। এর ফলে পুকুরগুলো আরও উষ্ণ হয়ে ওঠে এবং তাদের চারপাশের বরফ বেশি গলিয়ে দেয়। ২০২৩ সালের একটি অধ্যয়নে বিশেষজ্ঞরা জানান মেল্ট পণ্ডের পর্যবেক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পৃথিবীতে যে হারে উষ্ণতা বাড়ছে এখনই সংযত না হলে ধ্বংসের আর বেশি বাকি নেই।