কবি ঝিনুক

কবি ঝিনুক

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৭ অক্টোবর, ২০২১

প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ সাথীকে স্ত্রী সাথী আশ্রয় দেয় নিজেরই শরীরের ভেতর। স্ত্রী সাথীর খোলোসের ভেতর অনায়াসেই আকারে কয়েকগুন ছোটো পুরুষ সাথী ঢুকে যেতে পারতো। এ প্রক্রিয়া প্রজননের নিশ্চয়তার জন্যে। আজকের কোনো প্রাণী নয়। প্রায় সাড়ে ৫ কোটি বছর আগে ভারতের সমুদ্র উপকুলবর্তী ম্যানগ্রোভ অঞ্চলে বসবাসকারী অত্যাশ্চর্য এক ঝিনুক প্রজাতির ছিল এমন অদ্ভুত যাপনপ্রণালী। এই যাপন আসলে একরকম অভিযোজন। ঝিনুকের ক্ষেত্রে সাধারণত পুরুষ প্রজাতির শুক্রাণু জলবাহিত হয়ে পৌঁছায় স্ত্রী দেহে। কিন্তু ক্রমাগত তাপবৃদ্ধির ফলে অয়েস্টার গোত্রের প্রাণীটি অভিযোজিত হয় নতুন ঐ প্রণালীতে।
সম্প্রতি প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই অধ্যাপক কল্যাণ হালদার ও অনিকেত মিত্র ২০১৩ সালে ভারতের পশ্চিম উপকূল থেকে পাওয়া জীবাশ্মের প্রজাতি নির্ণয় করে দেখান যে সেটি অয়েস্টার গোত্রের প্রাণী। অধ্যাপকদ্বয়ের আবিষ্কারেই এই বিলুপ্ত ঝিনুক প্রজাতির ঐ বিচিত্র জীবনপ্রণালীর সন্ধান মিলেছে। এর আগে আর্জেন্টিনায় প্রাপ্ত ঝিনুক প্রজাতির সাথে ভারতের উপকূলীয় অঞ্চলে প্রাপ্ত এই ঝিনুক প্রজাতির জীবনচক্রের প্রায় হুবহু মিল পাওয়া গেছে। ভারতে যে এপ্রজাতির ঝিনুক বাস করতো তা জানা গেল এই প্রথম।
আরো চমকের প্রাণীটির নাম রাখা হয়েছে কবি জীবনানন্দ দাশের নামে- অস্ট্রিয়া জীবনানন্দাই। কল্যাণবাবুদের কথায়, বিখ্যাত মানুষের নামে সন্ধান পাওয়া নতুন প্রজাতির জীবের নামকরণের রীতি মেনেই এ নামকরণ। তবে এক্ষত্রে বিখ্যাত মানুষ নির্বাচনে ব্যক্তিগত ভালোলাগা কাজ করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twenty − four =