কোভিডোত্তর সমস্যা মেটাতে টিকা

কোভিডোত্তর সমস্যা মেটাতে টিকা

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৭ আগষ্ট, ২০২১

বছরে একটা ইনফ্লুইয়েঞ্জার টিকা। তাতে কোভিডে আক্রান্ত যে কোনও রোগীর স্ট্রোক, সেপসিস, রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়া এবং আরও অনেক ধরনের গুরুতর অসুখ হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে। স্বস্তির খবরটা জানাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মায়ামি স্কুল অফ মেডিসিন বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা। ওই গবেষকরা আরও জানিয়েছেন, কোভিডে আক্রান্ত কোনও রোগীকে ফ্লুয়ের টিকা দেওয়ার পর তার এমার্জেন্সি বিভাগ বা আইসিউ-তে ভর্তি হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।
মিলার স্কুলের অধ্যাপক দেবীন্দর সিংহের দাবি, “এখনও পর্যন্ত বিশ্বে পুরো জনসংখ্যার মধ্যে অল্পসংখ্যক মানুষকে কোভিডের টিকা দেওয়া সম্ভব হয়েছে। এই মহামারীর জন্য বিশ্বজুড়ে যে ধ্বংসলীলা চলেছে এবং চলছে তাকে প্রতিরোধ করার জন্য সমাধানের প্রয়োজন একদমই ফুরিয়ে যায় নি। মায়ামি স্কুল অফ মেডিসিন বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষকদল সেই চেষ্টাই করে যাচ্ছে। ফ্লু টিকার মাধ্যমে কোভিডের অসুস্থতা কতটা কমে তার একটা পর্যবেক্ষণ এবং এর কার্যকারিতার ওপর নজর রাখা এই গবেষণার অন্যতম বিষয়।”
গবেষকরা ৩৭,৩৭৭ জন রোগীকে দু’টো ভাগে ভাগ করেছিলেন। একটি গ্রুপের রুগিদের ফ্লু-এর টিকা দেওয়া হয়েছিল কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার অন্তত ৬ মাস এবং ২ সপ্তাহ আগে। অন্য গ্রুপের রোগীদের ফ্লু-এর টিকা দেওয়া হয় নি। দেখা গিয়েছে, ২০ শতাংশ রোগী যাদের ফ্লু-এর টিকা দেওয়া হয়নি তাদের আইসিউ-তে ভর্তি হতে হয়েছিল। ৪৫ শতাংশ রোগীর সেপসিস হয়েছিল এবং ৪০ শতাংশ মানুষের ডিভিটি হয়েছিল। ফ্লু-এর টিকা নিয়ে কোভিডে আক্রান্ত রোগীদের মৃত্যুর সম্ভাবনা যে কমে যাবে সেটা গবেষকরা বলছেন না। তবে একইসঙ্গে ওই গবেষণা এ-ও জানিয়েছে যে, কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার ১২০ দিনের মধ্যে ৪৪০ জন রোগীকে ফ্লু টিকা দেওয়া হলে তাদের আইসিউ বা এমার্জেন্সিতে ভর্তি হওয়ার সম্ভাবনা কমে গিয়েছে।
গবেষকরা যদিও এখনও জানতে পারেননি ফ্লু টিকা ঠিক কীভাবে কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াই করে। তবে তাঁদের মনে হচ্ছে, ফ্লু টিকায় মানুষের শরীরের ইমিউনিটি বাড়ে। সেটাই কোভিড রোগীকে লড়াই করতে সহায়তা প্রদান করে।
গবেষণা থেকে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ পাওয়া গিয়েছে। পৃথিবীর যে দেশগুলোতে টিকা সরবরাহ কম সেখানে ফ্লু টিকা কিন্তু কোভিড-যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে।
তৃতীয় বিশ্বের রাষ্ট্রনেতারা কী শুনবেন এই পরামর্শ?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

seven + 10 =