চার বছরে শ্রীহরিকোটায় মোট ১০০ মিটার উপকূলরেখা হারিয়ে গেছে, সতর্ক বিজ্ঞানীরা

চার বছরে শ্রীহরিকোটায় মোট ১০০ মিটার উপকূলরেখা হারিয়ে গেছে, সতর্ক বিজ্ঞানীরা

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

গোটা বিশ্ব যখন চন্দ্রযান-৩ এবং আদিত্য-এল ১ মিশনের সাফল্যের কথা বলছে, তখন ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো) শ্রীহরিকোটায় সমুদ্রের তীরবর্তী অঞ্চলের ভূমি ক্ষয়ের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। কর্মকর্তাদের মতে, গত চার বছরে ১০০ মিটার উপকূলরেখা হারিয়ে গেছে। অন্ধ্র প্রদেশ স্টেট কোস্টাল জোন ম্যানেজমেন্ট অথরিটি ভারতের মহাকাশ বন্দর, শ্রীহরিকোটায় ভূমিক্ষয় রোধ করতে গ্রোইন বলে এক ধরনের কাঠামো তৈরির অনুমোদন দিয়েছে। সমুদ্র সৈকতের উপরে, নদী বা সমুদ্রের উপকূলবর্তী অঞ্চল সুরক্ষিত রাখার জন্য সমুদ্র সৈকতে লম্বভাবে নির্মিত হয় এই গ্রোইন যা জলের প্রবাহকে বাধা দেয়। এটি সাধারণত কাঠ, কংক্রিট বা পাথর দিয়ে তৈরি হয়।
ইসরোর অধিকর্তাদের মতে ২০১৯-’২০ সাল থেকেই বিষয়টি নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন ছিল। ঘূর্ণিঝড়ের ফলে দুটি উপকূলীয় সড়ক ভেসে গেছে এবং তৃতীয় সড়কটিও সম্প্রতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গত বছরের শুরুর দিকে সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টার (SDSC-Shar) চেন্নাইয়ের ন্যাশনাল সেন্টার ফর কোস্টাল রিসার্চের (NCCR) বিজ্ঞানীদের সাহায্যে একটি উপকূলীয় গবেষণা পরিচালনা করে এবং সমুদ্র ক্ষয়জনিত সমস্যার প্রতিকারমূলক ব্যবস্থার পরামর্শ দেয়। NCCR-এর এক শীর্ষ আধিকারিক বলেন যে শ্রীহরিকোটা এবং আরও উত্তরে উপকূলীয় অঞ্চলে সমীক্ষা চালানো হয়েছে। দেখা গেছে দ্বীপ এবং কাছাকাছি উপকূলীয় অঞ্চলে প্রাকৃতিক এবং নৃতাত্ত্বিক উভয় ক্রিয়াকলাপের কারণে ক্ষয়ের সম্মুখীন হচ্ছে। সাম্প্রতিককালে নিম্নচাপ এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের পরিবর্তনের ফলে শ্রীহরিকোটায় আরও ক্ষয় লক্ষ্য করা গেছে। চেন্নাইয়ের প্রস্তাবিত আদানি-কাট্টুপল্লি বন্দর সম্প্রসারণের কারণে ইসরো কর্মকর্তারা শ্রীহরিকোটাতে সম্ভাব্য ভাঙনের বিষয়েও সতর্ক রয়েছেন এবং বিষয়টি কেন্দ্রকে অবহিত করা হয়েছে। বন্দর সম্প্রসারণের অংশ হিসাবে, প্রায় ৯.৩৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের দুটি নতুন ব্রেকওয়াটার প্রস্তাব করা হয়েছে, যার মধ্যে উত্তরের নতুন ব্রেকওয়াটারের দৈর্ঘ্য প্রায় ৬.২ কিলোমিটার এবং. ১.৩ কিলোমিটার এবং দক্ষিণের নতুন ব্রেকওয়াটারের দৈর্ঘ্য প্রায় ১.৮৫ কিলোমিটার। অধিকর্তাদের মতে এই দীর্ঘ ব্রেকওয়াটার দীর্ঘ দূরত্বের বালি পরিবহন রোধ করে শ্রীহরিকোটায় ক্ষয়জনিত সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। এছাড়াও এই সম্প্রসারণের ফলে অন্যান্য পরিবেশগত উদ্বেগও রয়েছে।