
বিশালাকার কুঁজওয়ালা তিমি এবার এক নতুন রূপে যেন ধরা দিল। মানুষকে উদ্দেশ করে জলের নীচ থেকে তারা নিখুঁত বুদবুদের গোলক ছাড়ে। যেন ধূমপানের রিং!। তবে এই আচরণ নিছক খেলার ছল নয়, হতে পারে এটা একরকম ‘নির্বাক বার্তা’! SETI ইনস্টিটিউট এবং ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া, ডেভিস-এর বিজ্ঞানীরা এই অদ্ভুত, বিস্ময়কর আচরণটি রেকর্ড করেছেন। মাছ ধরার জন্য কিংবা প্রতিযোগিতামূলক আচরণ নয়, মানুষের সংস্পর্শে এই বুদবুদ তৈরির সময় তিমিরা শান্ত, কৌতূহলী থাকে। ড. লরেন্স ডয়েল বলছেন, “যেভাবে কুঁজওয়ালা তিমিরা আলাদারকম কৌতূহল প্রকাশ করছে, তা প্রমাণ করে ‘বুদ্ধিমত্তা’ শুধু মানুষের সম্পত্তি নয়।” এই গবেষণার মূল উপজীব্যই হল ‘বুদ্ধিমান প্রাণী যোগাযোগ করতে চাইবে’। আর এই ধারণাই তিমির আচরণে প্রতিফলিত হয়। তিমিরা শুধু একে অপরকে সাহায্য করে না, বরং অন্য প্রজাতিকেও শিকারীদের হাত থেকে রক্ষা করে। কিন্তু মানুষের উদ্দেশে সৃষ্ট বুদবুদের রিং, খেলতে চাওয়ার মতন, যেন কিছু বোঝাতে চায় অথবা আমাদের প্রতিক্রিয়া জানার চেষ্টা করে! সামুদ্রিক জীবনচিত্রগ্রাহক ও গবেষক জোডি ফ্রেডিয়ানি জানান, “বিশ্বজুড়ে অন্তত ১২টি কুঁজো তিমি স্বেচ্ছায় মানুষের কাছে এসে এই বুদবুদের খেলা দেখিয়েছে।” আমরা মঙ্গলের পরিবেশ বুঝতে কুমেরু নিয়ে গবেষণা করি, তেমনি জলে বাস করা বুদ্ধিমান প্রাণীদের আচরণ বিশ্লেষণ করে ভিনগ্রহের প্রাণীদের সম্ভাব্য যোগাযোগ পদ্ধতি নিয়েও বোঝার চেষ্টা করছে দলটি। যেমন ক্যারেন প্রায়র বলেন, “ডাঙার প্রাণীদের মধ্যে যেটা নেই, সেটাই আছে তিমিদের মধ্যে—বুদবুদের ভাষা।” সম্ভবত মহাবিশ্বের সবচেয়ে আশ্চর্য বার্তাগুলি ঠিক আমাদের পাশেই, বিশাল নীল সাগরের গহনে, বুদবুদের রূপে ফেটে পড়ছে।