![](https://bigyanbhash.org/wp-content/uploads/2021/10/animal.gif)
শুধু আবহাওয়ার পরিবর্তন হয়ে পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি নয়, গবেষক, সমাজবিজ্ঞানীদের পর্যবেক্ষণ জানাচ্ছে যুগে যুগে তৈরি হওয়া নগরায়নও ধ্বংস করেছে, এবং করছে বন্যপ্রাণীদের বিভিন্ন প্রজাতিকে। যেরকম, জার্ড ডায়মন্ড ২০০৫-এ লিখেছিলেন বিখ্যাত বই ‘কোলাপ্স’। সেখানে তার গবেষণা মানবসভ্যতাকে জানিয়েছে, ভূমি বা মাটির ওপর মানুষের শোষণ! ডায়মন্ড বলেছেন, জমিকে ধ্বংস করে তার ওপর নগরায়ন সৃষ্টির কাজ কিন্তু আজকের নয়। সেই রোমান যুগ থেকে। ভূমধ্যসাগরীয় উপত্যকাকে সম্পূর্ণ ‘গাছবিহীন’ উপত্যকা বানিয়ে ফেলার কাজ ছিল তাদের! নগরায়ন সৃষ্টির সেটাই ছিল আধুনিক মানবসভ্যতার উৎস। তারপরই যুগে যুগে পৃথিবী জুড়ে বাড়তে থাকে জনসংখ্যা আর নগরায়ন। ১৭০০-র দশকে শিল্পবিপ্লবের সময় থেকে পাশ্চাত্যে নগরায়নের বিস্তৃতি বাড়তে থাকে। বদলাতে থাকে বিশ্ব জুড়ে ল্যান্ডস্কেপের ছবি! সবুজ পৃথিবীর ক্রমশ ‘সবুজহীন’ হয়ে পড়া। আর নগরায়ন মানে? বাতাসের দুষণ, শব্দের দুষণ, চোখ ধাঁধানো কৃত্রিম আলো-সভ্যতার আধুনিকীকরণের এই উপহারগুলোতে নিশব্দে ক্ষতি হয়েছে, উদ্ভিদ আর প্রাণীকূলের। বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে কত বিরল প্রজাতির পাখির! প্রযুক্তি আর উদ্ভাবনী যন্ত্রের বিপ্লবে মানুষ তার চারপাশের পরিকাঠামোর বিপুল উন্নয়ন এনেছে। কোটি কোটি ‘বার্জ খলিফা’ তৈরি করেছে পৃথিবী জুড়ে! কিন্তু প্রকৃতির খোঁজ রাখার সময় হয়নি! যে প্রকৃতি মানুষের সভ্যতার আধুনিকীকরণের বরাবরের উৎস! এখনও! অবিরাম জঙ্গল ধ্বংসের কাজ চলছে। দাবানল থামানোর উপায় বার করার প্রযুক্তিকরণের চেষ্টা করা হয়নি। নির্দ্ধিধায় মেরে ফেলা হচ্ছে বিরল প্রজাতির প্রাণীকূলকে। ‘অর্থ আর স্বাচ্ছন্দ্য’-এই দুইয়ের আবর্তে জীবনকে মুড়ে রাখার মানুষের নিরন্তর প্রয়াসের প্রতিফলন, প্রকৃতির নিজস্ব সম্পদ, যার মধ্যে অন্যতম উদ্ভিদ আর প্রাণীকূল, তাদের বিলুপ্তি হয়েছে, হচ্ছেও।
গবেষকরা জানিয়েছেন, যে কোনও সবুজকে ধ্বংস করে সেখানে নগরায়ন হওয়ার পর সেই অঞ্চলে পাখিদের আনাগোনা বন্ধ হয়ে যায়। তবু, কোথাও কোথাও এখনও নগরায়নের চুড়ান্ত বৈভবের মধ্যেও মানুষ দেখতে পায় কাক, চড়াই, শুনতে পায় ভোরের কোকিলের ডাক! গবেষকরা উদ্বিগ্ন, যেভাবে সবুজ ধ্বংস করে নগরায়নের বৃদ্ধি চলছে তাতে অদূর ভবিষ্যতে সেটাও পাওয়া যাবে কি না সন্দেহ!