পরিবেশ বান্ধব কারখানা

পরিবেশ বান্ধব কারখানা

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১১ ডিসেম্বর, ২০২১

প্রশাসনিক ভবনের কাছে অবস্থিত বাগানটির নাম দেওয়া হয়েছে তিতলি বাগান। তিতলি মানে প্রজাপতি। প্রায় ৩০ ধরনের প্রজাপতির দেখা মেলে বাগানে- তাই এমন নামকরণ। চমকের এই যে বাগানটি ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের চত্বরে। কীভেবে সম্ভব হলো কারখানার দূষণ অতিক্রম করে প্রজাপতির মেলা বসানোর?

হলদিয়ার তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র চত্বরের পরিবেশ কতটা দূষিত তা দেখতেই শুরুয়াৎ তিতলি বাগানের। তিতলি বাগানে লাগানো হয়েছে প্রজাপতির পছন্দের গাছ। সংস্থার পরিবেশ বিষয়ক মুখ্য ম্যানেজার সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, প্রজাপতির আনাগোনা দেখেই আশ্বস্ত হই যে দূষণের সূচক নিম্নমুখী।

দূষণের কারণেই হলদিয়ায় শিল্প স্থাপনে স্থগিতাদেশ ছিল। পরিকল্পনা করেই সেসময়ে ১লক্ষ ২০ হাজার গাছ লাগানো হয় ধাপে ধাপে। এই গাছগুলি বাঁচিয়ে রাখার ফলেই সুফল মিলেছে- জানাচ্ছেন কারখানা কর্তৃপক্ষ। কেবল প্রজাপতি নয়, সবুজায়ন ফিরিয়ে এনেছে পাখি, জীবজন্তু।

তিতলি বাগান ছাড়াও কারখানার পরিবেশ বান্ধব উদ্যোগের মধ্যে আছে ১০ হাজার বর্গফুটের ভেষজ ও ওষধি বাগান ‘ঋষি কৃষি’। ৫০০ প্রজাতির ভেষজ গাছ রয়েছে। তুলসী, অনন্তমূলের মতো চেনা গাছ থেকে শুরু করে নানা অচেনা গাছ। কারখানা চত্বরে আরো রয়েছে গ্রীন বেল্ট। নানা জাতের দেশী বিদেশী বৃক্ষের সম্ভার। আর এর ফলেই আসছে নানা জাতের পাখি, জন্তু। ঝিলে দেখা যাচ্ছে সাইবেরিয়ার পাখিও। চমকের এসব গাছের পরিচর্যা হয় কারখানা চত্বরেই তৈরি জৈব ঘাসে।

কারখানা কর্তৃপক্ষ চত্বরে ঠিক কী কী জীব জন্তু আছে তা জানার জন্য সমীক্ষা চালায়। দেখা যায় বাঘরোল, গোসাপ, শেয়াল, বনবেড়াল সহ নানা ধরণের প্রাণী মিলছে। সমীক্ষার ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে ‘নেচার সার্ভ’ নামের একটি ৭০ পাতার বই প্রকাশ হয়েছে। সংস্থার কলকাতা দপ্তরে গত ২০ ই নভেম্বর বইটি উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিভাগের সিনিয়র বিজ্ঞানী এস কেরকাট্টা ও আরো কয়েকজন বিশিষ্ট মানুষ। পূর্ব মেদিনীপুরের ডিএফও অনুপম খান সংস্থার এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

3 × 1 =