বিটের রস হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়?

বিটের রস হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়?

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১৬ জুন, ২০২৪

বয়স পঞ্চাশের আশপাশে পৌঁছলেই সবচেয়ে বেশি যে চিন্তাটি মহিলাদের ভাবায়, তা হল ঋতুবন্ধ। কিন্তু এও ঠিক যে, ঋতুবন্ধ একটি অত্যন্ত স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া, যার সম্মুখীন সব মহিলাদের এক দিন না এক দিন হতেই হবে। এই সময় সকলের শরীরে বেশ কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায়। গবেষণা থেকে জানা যায় মেনোপজ বা ঋতুবন্ধের মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় মহিলাদের হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। এক নতুন গবেষণায় পেন স্টেটের গবেষকরা দেখার চেষ্টা করেন যে বিটের রস রক্তনালির কার্য ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারে কিনা। গবেষণাটি ফ্রন্টিয়ার্স ইন নিউট্রিশন-এ প্রকাশিত হয়েছে।
বিটের রসে উচ্চ মাত্রায় নাইট্রেট থাকে, যা শরীর নাইট্রিক অক্সাইডে রূপান্তরিত করে। নাইট্রিক অক্সাইড রক্তনালিগুলোকে প্রসারিত করতে সাহায্য করে। রক্তনালিগুলোর মুখ খুলে যায়, যার হাত ধরে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে, শরীরে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে৷ হৃদপিণ্ড অনেক বেশি সচল থাকে৷ গবেষকদের মতে, শরীরে যখন রক্ত প্রবাহ বাধা পায় এবং অক্সিজেনের মাত্রা কমে যায় তখন রক্তনালি প্রশস্ত করার জন্য নাইট্রিক অক্সাইড বিশেষভাবে সহায়ক বলে পরিচিত। এই গবেষণায় গবেষকরা ৫০ থেকে ৬০ বছর বয়সী ২৪ জন পোস্টমেনোপজাল মহিলাদের মধ্যে পরীক্ষা করেছেন কীভাবে নাইট্রেট সমৃদ্ধ বিটের রস রক্তনালির স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে।
ঋতুবন্ধের পরে, মহিলাদের শরীরে আর ইস্ট্রোজেন হরমোন তৈরি হয় না, ফলত শরীরে নাইট্রিক অক্সাইডের মাত্রা পরিবর্তিত হয়। নাইট্রিক অক্সাইড উৎপাদন হ্রাসের ফলে ঋতুবন্ধের পরে মহিলাদের হৃদরোগের ঝুঁকি যথেষ্ট বৃদ্ধি পেতে পারে। নাইট্রেট সমৃদ্ধ খাবার – বিশেষ করে বিট – হৃদপিণ্ড ও রক্তনালিকে রক্ষা করার জন্য একটি প্রাকৃতিক উপায় হিসেবে মনে করেন গবেষকরা। তারা আরও বলেন ঋতুবন্ধের পরবর্তী বছরগুলোতে যদি রক্তনালির কার্যকারিতা উন্নত রাখা যায় তবে তা উল্লেখযোগ্যভাবে হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস করতে পারে। আর তা করতে বিটের জুড়ি মেলা ভার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × 3 =