আশির দশকের শেষদিকে মেক্সিকোর এক বিশেষ প্রজাতির মাছকে বিপন্ন প্রাণীকূলের তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছিল। প্রজাতির নাম টাকিলা। আকার ও আয়তন পুঁটি মাছের মত। শুধু পুঁটির সঙ্গে রঙের তফাৎ। টাকিলা কৃষ্ণবর্ণ। গায়ে তার উজ্জ্বল সাদা দাগ আর ল্যাজে কমলা রঙের ব্যান্ড। পরিবেশকর্মী ও বিজ্ঞানীরা বারবার সরব হওয়া সত্বেও মেক্সিকোর সরকার কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। যার পরিণাম, মাত্র ২০ বছরের মধ্যে, ২০০৩-এর পর থেকে অবলুপ্ত টাকিলা মাছ। শুধু দর্শকদের দেখার জন্য মেক্সিকোরই চেষ্টার চিড়িয়াখানায় পাঁচ জোড়া টাকিলা সংরক্ষিত ছিল। কে জানত যে ওই পাঁচ জোড়া মাছের সৌজন্যে আবার ১৮ বছর পর ফিরে আসবে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া টাকিলা প্রজাতি! ডাঃ ওমার ডমিংগেজের নেতৃত্বে মেক্সিকোর একদল বিজ্ঞানী অনেক বছর আগেই ওই পাঁচ জোড়া টাকিলা মাছকে বন্দী অবস্থাতেই প্রজনন করানোর কাজ শুরু করেছিলেন। গবেষণাগারে বিশেষ পরিবেশ তৈরি করেই হয়েছিল প্রজননের কাজ। বছর পাঁচাকের মাথায় দেখা গিয়েছিল মাছের সংখ্যাটা প্রায় হাজারে পৌঁছে গিয়েছে। কিন্তু গবেষকদের সমস্যা এর পরও ছিল। টাকিলা মূলত মিষ্টি জলের মাছ। আর মিষ্টি জলের নদীতেই দূষণ বেশি। যে দূষণ টাকিলাদের অবলুপ্ত করে দিয়েছিল। তাই কৃত্রিমভাবে পুকুরে অল্প মাত্রায় দূষণ তৈরি করে প্রথমে ৪০ জোড়া মাছ ছেড়েছিলেন গবেষকরা। দূষণের সঙ্গে এবার টাকিলা নিজেকে মানাতে পারছে দেখে সম্প্রতি গবেষকরা মেক্সিকোর নদীতে ছাড়লেন প্রায় দেড় হাজার টাকিলা প্রজাতির মাছ। প্রায় দু’দশক পর টাকিলা আবার ফিরেছে মৎসপ্রজাতির মূল স্রোতে। গবেষকদের আশা আর টাকিলাদের বিলুপ্ত হতে হবে না।