বিশ্বব্যাপী জল সঞ্চয় হ্রাস পাচ্ছে

বিশ্বব্যাপী জল সঞ্চয় হ্রাস পাচ্ছে

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা‌
Posted on ১৪ আগষ্ট, ২০২৩

দৈনন্দিন জীবনে জল খুবই গুরুত্বপূর্ণ, আর জলের কোনো বিকল্প নেই। বিশ্বের জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির সাথে সাথে জলের চাহিদা আনুপাতিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। অতিরিক্ত জলাধার নির্মাণের ফলে মোট জল সঞ্চয় ক্ষমতা বৃদ্ধি পেলেও গত বিশ বছরে বিশ্বব্যাপী জলের মজুদ কমে যাচ্ছে। টেক্সাস এএন্ডএম ইউনিভার্সিটির সিভিল অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. হুইলিন গাও-এর নেতৃত্বে, গবেষকরা ১৯৯৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ৭,২৪৫টি বৈশ্বিক জলাধারের স্টোরেজ ক্ষমতা দেখার জন্য স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া তথ্য সহ একটি নতুন পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন৷ নেচার কমিউনিকেশনে প্রকাশিত এই গবেষণায় বলা হয়েছে যে জল সঞ্চয় ক্ষমতা বৃদ্ধি সত্ত্বেও, জলাধার ভরাটের হার প্রত্যাশার চেয়ে কম।
গাও-এর মতে একুশ শতকে বিশ্বব্যাপী জনসংখ্যা বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায়, পরিবর্তিত জলবায়ুর প্রেক্ষাপটে ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে ভূপৃষ্ঠের জলাশয়ের উপর নির্ভরশীলতা বাড়ছে। তবে, জলাধারে উপলব্ধ জলের পরিমাণ নিয়ে এযাবৎ কোনো তথ্য উঠে আসেনি। তাই গবেষকরা গ্লোবাল রিজার্ভার স্টোরেজ ডেটাসেট তৈরি করেছেন যা সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী এবং বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গের সুবিধার জন্য বিনামূল্যে অনলাইনে উপলব্ধ। গাও মনে করেন যে এটি বিশ্বব্যাপী জলাধার স্টোরেজ অবস্থা চিহ্নিত করতে অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি।
নদী বা জলাশয়ে জলের প্রবাহে অনুমানিক হ্রাস এবং ক্রমবর্ধমান জলের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে, জলাধার নির্মাণ বাড়লেও জল সঞ্চয় হ্রাসের প্রবণতা অব্যাহত থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে, আর তাই উল্লেখযোগ্যভাবে জল সরবরাহকে প্রভাবিত করবে৷ এর থেকে এটা স্পষ্ট যে ভবিষ্যতে জলের চাহিদা মোকাবেলার ক্ষেত্রে শুধুমাত্র নতুন জলাধার নির্মাণ করলেই হবে না বরং অভিনব ব্যবস্থাপনার উপর জোর দিতে হবে। দক্ষিণ এশিয়া, আফ্রিকা এবং দক্ষিণ আমেরিকা সহ বৈশ্বিক দক্ষিণে জলাধারে জল সঞ্চয় হ্রাস বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। নতুন জলাধার নির্মাণের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও, তথ্য থেকে বোঝা যাচ্ছে যে জলাধার পূরণে ঘটতি রয়ে যাচ্ছে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটতি দেখা গেছে দক্ষিণ আমেরিকা এবং আফ্রিকায়, যেখানে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা কারণে জলের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। অন্যদিকে গ্রেট লেক এবং সাইবেরিয়ার মতো উচ্চ-অক্ষাংশ অঞ্চলের জলাশয়গুলোতে বেশি পরিমাণে জল সঞ্চয় হচ্ছে, কারণ সেখানে জনসংখ্যার ঘনত্ব অনেক কম এবং মানুষের হস্তক্ষেপও অনেক কম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

17 − 3 =