বুলন্দশহরের জ্যোতির্বিজ্ঞান ল্যাবোরেটরি নজর কাড়ল

বুলন্দশহরের জ্যোতির্বিজ্ঞান ল্যাবোরেটরি নজর কাড়ল

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৯ জানুয়ারী, ২০২২

উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহরের একটি স্কুলের জ্যোতির্বিজ্ঞান ল্যাবোরেটরি নেটপাড়ার লোকজনের নজর কেড়ে নিয়েছে। এক জ্যোতির্বিজ্ঞানী সেই ল্যাবের ছবি ট্যুইটারে পোস্ট করেছেন। আমেরিকার বিভিন্ন স্কুলের সায়েন্স ল্যাবোরেটরি ঠিক যে ধাঁচে তৈরি করা হয়, উত্তরপ্রদেশের স্কুলের এই ল্যাবোরেটরিটিও তার থেকে কোনও অংশে কম যায় না। অশোকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জ্যোতির্বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করছেন আরিয়ান মিশ্র। এই ছবি পোস্ট করে তিনি জানিয়েছেন, উত্তরপ্রদেশের ছাপোষা একটা সরকারি স্কুলের এই অ্যাস্ট্রোনমি ল্যাব পড়ুয়াদের আরও স্কুলমুখো করে দিয়েছে।
পরিসংখ্যান দিয়ে আরিয়ান স্পষ্ট করে দিয়েছেন, জ্যোতির্বিদ্যা ল্যাবোরেটরি খোলার পরে স্কুলে পড়ুয়াদের উপস্থিতি ৩০ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে। মিশ্র ট্যুইটারে দাবি করেছেন যে, ল্যাব খোলার এক মাসের মধ্যেই ১২টি নতুন ভর্তি রেকর্ড করা হয়েছে। তাও বুলন্দশহরে নয়। সেখান থেকে দূরবর্তী সাঁওলি নামের একটি গ্রামের সরকারি স্কুলে ল্যাবটি তৈরি করা হয়েছে। আরিয়ান বলছেন, পঠনপাঠনের দিক থেকে রাজ্য হিসেবে উত্তরপ্রদেশ যে একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে তা প্রমাণ করে দিল গ্রামের স্কুলের এই জ্যোতির্বিজ্ঞান ল্যাবোরেটরিটি। তিনি আরও জানিয়েছেন যে, এই ল্যাবোরেটরিতে যাতে সামনের দিনে মহিলারাও আসেন এবং কচিকাচাদের মতোই জ্যোতির্বিজ্ঞান নিয়ে তাঁরা ভাবনাচিন্তা করেন, সে দিকটাও ভেবে দেখছে স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং সরকার।
আরিয়ান মিশ্র একটি ভিডিয়োও পোস্ট করেছেন। সেই ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, সাঁওলি গ্রামের বাচ্চা মেয়েরা স্পেস মডেল নিয়ে খেলা করছে। একটি রাজ্যে বাচ্চাদের শিক্ষা এবং বিজ্ঞানকে গুরুত্ব সহকারে নেওয়ার জন্য একটি ভাল দিকের সূচনা হতে পারে এই ল্যাবের মধ্যে দিয়ে। উত্তরপ্রদেশে এই মুহূর্তে স্বাক্ষরতার হার ৬৯.৭২ শতাংশ।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে উত্তরপ্রদেশে পুরুষ সাক্ষরতার হার দাঁড়িয়েছে ৭৯.২৪ শতাংশে৷ মহিলাদের ক্ষেত্রে সাক্ষরতার হার হল ৫৯.২৬ শতাংশ। যদিও নয়ডা এবং গাজিয়াবাদের মতো শহরগুলির সাক্ষরতার হার উচ্চতর (যথাক্রমে ৯০ এবং ৮১ শতাংশ) দেশের রাজধানীর সঙ্গে শহরগুলির নৈকট্যের কারণেই স্বাক্ষরতার এই হার লক্ষ্য করা গিয়েছে। সে দিক থেকে দেখতে গেলে উত্তরপ্রদেশের বেশিরভাগ অভ্যন্তরীণ গ্রামগুলিকে এখনও অনেক দূর যেতে হবে৷
এই জ্যোতির্বিজ্ঞান ল্যাবোরেটরিটি উত্তরপ্রদেশের গ্রামের স্কুলের বাচ্চাদের আগ্রহ জাগিয়ে তুলতে পেরেছে। বাচ্চাদের আরও বেশি করে স্কুলমুখো করে তুলতে একটি আদর্শ মডেল হিসাবে কাজ করতে পারে এই অ্যাস্ট্রোনমি ল্যাব। বিশেষ করে কোভিড-১৯ অতিমারির সময়, যখন বাড়ির অভিভাবকদের জীবিকার উত্সগুলি আরও সীমিত হয়ে যাওয়ার কারণে অনেক শিশু স্কুল ছেড়ে দিয়েছে।