মৃতের রক্তে খুনির ডিএনএ লুকিয়ে থাকে!

মৃতের রক্তে খুনির ডিএনএ লুকিয়ে থাকে!

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১ ডিসেম্বর, ২০২১

রণজিৎ চক্রবর্তীকে চেনেন? সাধারণ মানুষের ভাবতে সময় লাগতে পারে, কিন্তু বিজ্ঞান সমাজ? একডাকে চিনবে! শুধু বাংলা বা ভারত নয়, গোটা পৃথিবীর বিজ্ঞান সমাজের কাছে বাংলার এই বিজ্ঞানী বিশিষ্ট এক নাম। কারণ তার মেধা আর পরিশ্রমেই আবিষ্কার হয়েছিল মৃতের রক্তেও লুকিয়ে থাকে খুনির ডিএনএ!
ও জে সিম্পসনকে মনে আছে? আমেরিকার প্রাক্তন জাতীয় ফুটবলার। ১৯৯৪-এর যে রাতে তিনি তার স্ত্রী আর তার বন্ধু রোনাল্ড গোল্ডম্যানকে খুব করেছিলেন। যে খুনের মামলাকে বলা হয় পৃথিবীর সবচেয়ে প্রচারিত মামলা। এনবিএ-র লাইভ ম্যাচ দেখানো বন্ধ করে টিভি চ্যানেলগুলো ক্যামেরা নিয়ে ছুটেছিল কোর্টে, সিম্পসনের মামলা সরাসরি দেখাতে! ৯৫ মিলিয়ন মানুষ সেদিন দেখেছিল সিম্পসনের চলা মামলা।
সিম্পসন খুনের সাক্ষ্যপ্রমাণ কী ছিল? প্রত্যক্ষ সাক্ষ্যপ্রমাণ বলতে রক্তে মাখা একজোড়া হাতে গ্লাভস। সেখান থেকে ৬৪ ফোঁটা রক্ত নিয়ে খুনিকে শনাক্তকরণ করা হয়! শনাক্তকারীর দলটির অন্যতম সদস্য ছিলেন বিজ্ঞানী রণজিৎ চক্রবর্তী। ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিকাল ইনস্টিটিউট, কলকাতা থেকেই স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর স্তরে পড়াশুনো শুরু করেছিলেন তিনি। অল্প বয়স থেকেই রহস্যের প্রতি টান ছিল তার। আর সেই রহস্যের টানেই পরিসংখ্যান তত্ব নিয়ে তার চর্চা। তবে শেষপর্যন্ত গাণিতিক পরিসংখ্যানের চেয়ে জৈব পরিসংখ্যানের প্রতিই তার টান তৈরি হয় এবং সেই নিয়েই তার শুরু সাধনা। ১৯৭৩-এ টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হয়ে আমেরিকায় যাওয়া। সেখানে পড়ানোর পাশাপাশি আরও গভীরভাবে গবেষণা চালিয়ে যাওয়া। তার সবচেয়ে বড় কাজ জৈব নমুনা থেকে কী কী তথ্য সংগ্রহ করা যেতে পারে তার তালিকা বার করা। মার্কিন ফরেনসিক বিভাগে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন তিনি। ১৯৯৮-এ পেয়েছেন এফবিআই-এর বিশেষ পুরষ্কার। ফরেনসিক সংক্রান্ত পরিসংখ্যান বিষয়ে রণজিৎ চক্রবর্তীর হাতে নতুন দিগন্ত খুলে গিয়েছিল। ২০০২-এ এফবিআই-এর অ্যাকাডেমিতেও যোগ দিয়েছিলেন তিনি। টেক্সাসেই ২০১৮-তে-ই তিনি প্রয়াত হন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

16 − thirteen =