ম্যানগ্রোভ ও সুন্দরবনের কথা/১৪

ম্যানগ্রোভ ও সুন্দরবনের কথা/১৪

রথীন মণ্ডল
Posted on ২ জানুয়ারী, ২০২২

গোটা পৃথিবী তার ঘর

আমি এক যাযাবর,
আমি অস্ট্রেলিয়া থেকে ইন্ডিয়া হয়ে,
আমেরিকাতে গিয়েছি।
মাঝখানে আমি আফ্রিকা ও ইউরোপে থেমেছি।

হুড একটি ফার্ন জাতীয় গুল্ম। একমাত্র ফার্ন যার ম্যানগ্রোভ হিসেবে সারা পৃথিবীতে স্বীকৃতি আছে। এর উৎপত্তি অনেকদিন আগে, অথচ পৃথিবীতে বিভিন্ন জলবায়ুর পরিবর্তন সত্ত্বেও এখনও এরা টিকে আছে। এর নিজস্ব চারিত্রিক গুন খুব একটা দেখা যায় না, কিন্তু আশ্চর্যভাবে সারা পৃথিবীতে যাযাবরের মত এ অবস্থান করে চলেছে। এটি সুন্দরবনের অতি পরিচিত একমাত্র ফার্ন জাতীয় গুল্ম। শুধু সুন্দরবনে নয়, সারা পৃথিবীর সমস্ত মহাদেশে যেখানে ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল আছে, সেখানে একে পাওয়া যায়।

হুড একেবারেই আকর্ষণীয় নয়, তাই হঠাৎ করে চোখে পড়ে না। কিন্তু সব জায়গায় সব ঋতুতে এ সমানভাবে স্বচ্ছন্দ। এদের কাণ্ড মাটির নিচে থাকে, যাকে রাইজম বলে। এই কাণ্ড থেকে পত্রদণ্ড গুলি একটি নির্দিষ্ট বিন্যাসে উপরের দিকে বেড়ে ওঠে। সবচেয়ে ডগার পত্রদণ্ডটি কেন্নোর মত গোলাকারে ভিতরের দিকে মুড়ে থাকে। একে সুন্দরবনের লোকেরা ঢেঁকি শাক বলে, ভাজা করে খায়। সুস্বাদু লাগে। কলকাতার বাজারে বিক্রি হতে দেখা যায়।
এটি একটি অপুষ্পক উদ্ভিদ। ফুল হয় না, রেনু হয়। রেনুগুলি পত্র ফলকের নিচের তলে অবস্থান করে, তাই সহজে দেখা যায় না। রেনু থাকলে ও এরা রাইজম দিয়ে বেশিরভাগ সময় বংশবিস্তার করে। এদের বংশবিস্তারের পদ্ধতিকে অঙ্গজ জনন বলে। এদের কাছ থেকে শেখা যায় গুনি জনদের ঐ আপ্ত বাক্যটি ‘প্লেন লিভিং, হাই থিঙ্কিং’ – সহজ ভাবে বাঁচে, কিন্তু সারা পৃথিবীতে এরা নিজেদেরকে বিস্তার করে রাখে।