শুধু কী খাবো না- কখন খাবো ?

শুধু কী খাবো না- কখন খাবো ?

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৬ আগষ্ট, ২০২৩

আদিম যুগে মানুষ শিকার করে খেত আর তাই তাদের খাওয়া দাওয়া সম্পূর্ণরূপে নির্ভর করত শিকার পাওয়া, মাছ ধরা এবং ফলমূল পাওয়ার উপর। হয়ত সেজন্য অনেক সময় তাদের উপোস করেও থাকতে হত। সময়ের সাথে সাথে, আধুনিক কৃষির বিকাশ এবং শিল্পোন্নত সমাজে রূপান্তর, আমাদের খাওয়ার অভ্যাসে পরিবর্তন এনেছে, কাজের জন্য আমরা রাতেরবেলায় অনেক দেরী করে খাচ্ছি। আজ, আমাদের চারপাশে প্রচুর পরিমাণে খাবার রয়েছে, তাই আমাদের আর উপোস করে থাকতে হয়না। ওজন কমানো বা ধর্মীয় কোনো কারণ ছাড়া আমরা খুব কমই দীর্ঘ সময় ধরে উপোস করে থাকি। দিনে চারবার বা তার বেশি খাবার খাওয়া এখন সাধারণ ব্যাপার, আর দিনের শেষের দিকেই আমরা সবচেয়ে বেশি ক্যালোরি গ্রহণ করি। গবেষণা দেখায় যে আমাদের স্বাস্থ্য শুধুমাত্র আমরা কী এবং কতটা খাই তার উপর নির্ভর করে না, আমরা কখন খাই তার উপরও নির্ভরশীল।
দিনের বেলা খাবারের জন্য আমাদের শরীর জৈবিকভাবে প্রস্তুত থাকে। আমরা যখন সক্রিয় থাকি তখন খাদ্য গ্রহণ করলে সে খাদ্য হজম, পুষ্টি গ্রহণ এবং বিপাক হয়ে শক্তিতে পরিণত হয়। এই নির্ধারিত প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করলে বা যখন ঘুমানোর কথা তখন খাবার খেলে তা আমাদের স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে। গভীর রাতে খাবার খেলে বা অনিয়মিত খাওয়ার ধরন ওজন বৃদ্ধি করে এবং হজম সংক্রান্ত বিভিন্ন পেটের রোগের সৃষ্টি করে। যেমন অফিসে যারা রাতের বেলা কাজ করেন তাদের স্থূলতা, হৃদরোগ এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেশি থাকে।
গবেষকরা দেখেছেন যে আমাদের শরীরের আভ্যন্তরীণ যে ঘড়ি রয়েছে তার সাথে তাল মিলিয়ে খাবার গ্রহণ করলে আমাদের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। এর ফলে আমাদের স্নায়ুতন্ত্র বা অটোনোমাস নার্ভাস সিস্টেমের ছন্দ পুনরুদ্ধার হয় যা শ্বাস-প্রশ্বাস এবং হৃদস্পন্দনের মতো প্রয়োজনীয় কাজগুলো নিয়ন্ত্রণ করে, আমাদের শারীরবৃত্তিকে ঠিক রাখে। যদিও এই ক্ষেত্রে গবেষণা থেকে এখনও অনেক কিছু শেখার আছে, কিন্তু গবেষণা থেকে বোঝা যায় যে স্বাস্থ্যকর ওজন এবং সামগ্রিক সুস্থতা বজায় রাখতে, দিনের বেলায় নিয়মিত, পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে, রাতে দেরি করে খাওয়া যাবে না এবং ঘন ঘন টুক টাক মুখ চালানো এড়িয়ে চলতে হবে।