স্টাম্প ক্যামেরার কথা

স্টাম্প ক্যামেরার কথা

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২৫ অক্টোবর, ২০২১

স্টাম্প ক্যামেরা- আধুনিক ক্রিকেটের সঙ্গে জড়িয়ে আছে অঙ্গাঙ্গী ভাবে। একটি স্টাম্পে তিনটি উইকেটের মধ্যে মাঝের উইকেটটির মাঝামাঝি লাগানো থাকে একটি মাইক্রো ক্যামেরা। একেই ক্রিকেটের পরিভাষায় স্টাম্প ক্যামেরা বলে। স্টাম্প প্রস্তুতকারী কোম্পানিগুলি কাঠের উইকেটের মাঝে এমন একটি খোপ তৈরি করে যেখানে মাইক্রোক্যামেরা খুব সহজেই সেট করা যায়।

গতশতাব্দীর নয়ের দশকের গোড়ায় বিবিসি প্রথম মাঝের স্ট্যাম্পে এই ক্যামেরার প্রচলন শুরু করে। বিবিসির ব্যবহৃত ক্যামেরা ছিল হিটাচি কেপি-ডি৮এস মডেলের মাইক্রো ক্যামেরা। এই ক্যামেরায় পিচ, ব্যটসম্যানের অ্যাকসান, শট ধরা পড়ে নিখুঁত ভাবে। ফলে শট বিশ্লেষণ করা যায় বৈজ্ঞানিক ভাবে। তাছাড়া টিভি সম্প্রচারও করা যায় এতে। ভিন্ন ভিন্ন কোন থেকে নিখুঁতভাবেই দেখতে পান টিভির সামনে বসে থাকা দর্শকেরা। বর্তমানে এই ক্যামেরার সর্বনিম্ন দাম ১ লক্ষ টাকার আশেপাশে।আধুনিক স্ট্যাম্প ক্যামেরা ওয়্যারলেস। স্টাম্পের মাঝ উচ্চতা থেকে তারের সাহায্যে স্টাম্পের পেছনে মাটির নিচে পোঁতা জাংশান বাক্সে যুক্ত থাকে। এবং ওটিই সিগনাল বক্স। ঐ সিগনাল টিভি সম্প্রচারব্যবস্থার সাথে যুক্ত থাকে। আধুনিক স্টাম্প ক্যামেরায় তিন রকমের লেন্স ব্যবহার করা হয়। ৫০ ডিগ্রি, ৯০ ডিগ্রি, ১২০ ডিগ্রি। বেশি ডিগ্রি মানে ছবি হবে বিস্তৃত। নব্বই এর দশকে যখন স্টাম্প ক্যামেরার প্রচলন হয় তখন একটি দিকের স্টাম্পেই ব্যবহৃত হত তা। তিবে এখন উভয় দিকের স্টাম্পেই ব্যবহৃত হয়। এতে ব্যটসম্যানের সাথে বোলারের অ্যাকশানও রেকর্ড করা যায় সূক্ষ্মভাবে। এছাড়াও প্রথমযুগের সাদাকালো ছবির বদলে এখন এসেছে রঙিন ছবি। একটা প্রশ্ন আসতে পারে – ক্যামেরা বলের আঘাতে ভেঙে গেলে কি বার বার খেলার মাঝে বদল করতে হয় ক্যামেরা? এই ক্যামেরার সামনে থাকে ফ্লেক্সেবেল লেন্সগার্ড। বেশিরভাগ সময়েই বলের আঘাতে ক্যামেরা খানিক পিছিয়ে যায় মাত্র( ক্যামেরার পেছনটা উইকেটের মাঝের কাটা অংশটার দিকে)। যেমনকরে ক্যাচ ধরলে ফিল্ডার হাত পিছিয়ে নেয়, ফলে হাতে আর বলের অত আঘাত অনুভূত হয় না, তেমন বিজ্ঞানেই এই ক্যামেরা কাজ করে। সবমিলিয়ে লেন্স সহ ক্যামেরা ভাঙা খুবই ব্যতিক্রম।