উহানে যেমন করোনার আতঙ্ক তৈরি হয়েছিল ঠিক সেরকম। ২০১৬-তে এই অসুখের জন্ম কিউবার হাভানায়। ওখানকার আমেরিকান দূতাবাসের সমস্ত কর্মীরা আক্রান্ত হয়ে পড়েছিলেন। ভীষণ ক্লান্তি, কানে ভোঁ-ভোঁ শব্দ, এমনকী ভুলে যাওয়ার লক্ষণও তাদের মধ্যে দেখা দিয়েছিল। প্রাথমিকভাবে, কর্মীরা এবং অন্য আক্রান্ত রোগীদের মনে হয়েছিল কাজের চাপেই এই অসুস্থতা আসছে। হাভানার প্রখ্যাত চিকিৎসকরা বলেছিলেন, তা নয়। এ এক নয়া ভাইরাসের আক্রমণ। তারা নাম দিয়েছিলেন হাভানা সিন্ড্রোম। কিন্তু, এই ভাইরাসকে নিয়ে আলোড়িত হয় নি বিশ্ব। কারণ, হাভানার মার্কিন দূতাবাসে যে সমস্ত মার্কিন নাগরিকরা এবং শহরের অন্যান্য যে সমস্ত মানুষ আক্রান্ত হয়েছিলেন এই অসুখে, তারা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন। ভাইরাস তাদের শরীরে স্থায়ী হয় নি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, ভাইরাসটা ছড়ায়নি। একইসঙ্গে এ-ও সত্যি যে, বিজ্ঞানীরা কিন্তু হাভানা সিন্ড্রোমের রহস্য উদ্ধার করতে পারেননি। করোনার মত বলতে পারেন নি যে, আসলে হাভানা সিন্ড্রোম কী।
২০১৬ পেরিয়ে সময় ২০২১-এ পা রেখেছে। পাঁচ বছর পর এই অগস্ট মাসেই আবার হাভানা সিন্ড্রোম খবরের শিরোনামে উঠে এল। গত ২৪ অগস্ট আমেরিকার ভাইস-প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের সিঙ্গাপুর সফরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিনি গেলেন পরের দিন। বিমান বিভ্রাট নয়, হ্যারিসের কূটনৈতিক দলের কয়েকজন সদস্য এক অজানা অসুখে মানে, হাভানা সিন্ড্রোমে আক্রান্ত হয়ে পড়েছিলেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ইতিমধ্যে হাভানা সিন্ড্রোমে আক্রান্তের সংখ্যা কয়েকশো পেরিয়ে গিয়েছে! জার্মানি, রাশিয়া, অস্ট্রিয়া, কানাডা, এমনকী চিনেও সন্ধান মিলেছে হাভানা সিন্ড্রোমে আক্রান্ত রোগীর। কেউ বলছেন অসুখটা মানসিক। কোনও বিজ্ঞানীর মতে সেটা একদমই নয়। আমেরিকার বর্তমান প্রেসিডেন্ট বাইডেন একটি টাস্ক-ফোর্সও তৈরি করে ফেলেছেন হাভানা সিন্ড্রোমের রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য।টাস্ক-ফোর্সের দায়িত্বে একজনকে রেখেছেন যিনি দীর্ঘ দিনের তল্লাশির পর আমেরিকাকে জানিয়েছিলেন ওসামা বিন লাদেন কোথায় লুকিয়ে রয়েছে!