আইনস্টাইন এবারও ঠিক!

আইনস্টাইন এবারও ঠিক!

ঘুরতে থাকা কৃষ্ণগহ্বর যদি স্থায়ী না হত, নতুন করে লিখতে হত আইনস্টাইনের তত্ত্ব। কিন্তু, তেমনটা ঘটল না। কোয়ান্টা ম্যাগাজিনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কারের ব্ল্যাক হোল স্থায়ী। আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানীদের একটি দল প্রকাশ করেছে গবেষণাপত্রটি।

১৯৬৩ খৃষ্টাব্দে রয় কার নামের একজন গণিতজ্ঞ আইনস্টাইন সমীকরণের সমাধান দিয়েছিলেন। ঘুরতে থাকা একটা কৃষ্ণগহ্বরের চারপাশের সময়-কাল বেশ সঠিকভাবেই দর্শাতে পারে ঐ সমীকরণ। রয় কারের নাম থেকেই মহাজাগতিক অদ্ভুতুড়ে এই বস্তুকে কারের ব্ল্যাক হোল বলে ডাকা হয়।

মহাকর্ষ তরঙ্গের প্রবল আঘাতে ঝাঁকুনি হজম করেও যদি একটা ব্ল্যাক হোল সুস্থির থাকতে পারে, তাহলে রয় কারের গাণিতিক বিবরণ হুবহু মিলে যায়। বিগত কটা শতক ধরেই বিজ্ঞানীরা নিরলস গবেষণায় এটা প্রমাণ করার চেষ্টা করে গেছেন যে এই ধরণের ব্ল্যাক হোল অস্থায়ী নয়। অবশেষে একটা সমাধানের সন্ধান মিলেছে। কিন্তু উল্টোটা ঘটলে, একেবারে বুনিয়াদি ধাপ থেকেই পাল্টে ফেলতে হত আইনস্টাইনের মহাকর্ষ তত্ত্ব। সাথেসাথে মহাবিশ্বের অভিনব এই কৃষ্ণগহ্বরের খুঁটিনাটি বিষয়ে নতুন করে চিন্তা করার ছিল বিজ্ঞানী মহলের।

একটা ব্ল্যাক হোল কি চিরতরে বিনষ্ট হয় মহাকর্ষ তরঙ্গের বিপুল সংঘর্ষে? এই প্রশ্নকে ধাওয়া করেই খোঁজ মিলেছে নয়া গাণিতিক এই সমীকরণের। যদিও গবেষণা চলাকালীন নানান সম্ভাবনা ছিল। যেমন, মহাকর্ষীয় তরঙ্গ কি ব্ল্যাক হোলের ঘেরাটোপ পার করে তার ভেতর অনুপ্রবেশ ঘটাতে সক্ষম? তাতে কি কৃষ্ণগহ্বরের ওজন বা ঘূর্ণনে প্রভাব পড়বে? যাতে সেই ব্ল্যাক হোলের স্থায়িত্ব নষ্ট হয়ে সম্পূর্ণ অন্য এক গঠন তৈরি হতে পারে?

সরবোন বিশ্ববিদ্যালয়ের জেরেমি সেফটেল, কলোম্বিয়া ইউনিভার্সিটির এলেনা গিওর্গি আর প্রিন্সটনের সের্গিউ ক্লেনারম্যান। এই তিন গণিতবিদের সহযোগেই হয়েছে এই গবেষণা। অন্য ক্ষেত্রের বিজ্ঞানীদের কাজের উপর নির্ভর করে এনারা কারের গাণিতিক তত্ত্বকে সঠিক প্রমাণ করতে পেরেছেন। ক্লেনারম্যানের মতে, এই সাফল্যের মানে গোটা পরিসরকে জিতে নেওয়া।