নকল সি-ফুডের ধড়িবাজি ধরা পড়বে এবার

নকল সি-ফুডের ধড়িবাজি ধরা পড়বে এবার

কতটা নিরাপদ আর আসল রেস্তোরাঁর সামুদ্রিক খাবারগুলো? মুখের কথাতেই কি বিশ্বাস করা যাবে এইটা জাপানি ওইটা আরবিয়ান কিংবা সেইটা থাইল্যান্ডের? এতদিন কোনও নির্ভরযোগ্য উপায়ও ছিল না সি-ফুড যাচাই করার। এইবার হয়তো সেই আশঙ্কায় ইতি পড়বে।
সম্প্রতি ফিশ অ্যান্ড ফিশারিজ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে এক অভিনব গবেষণাপত্র। দাবি করা হয়েছে একপ্রকার কেমিক্যাল সিগনেচার নাকি আবিষ্কার করেছেন গবেষকরা।
কী এই কেমিক্যাল সিগনেচার? উত্তর লুকিয়ে আছে রসায়নের আইসোটোপ নামক বিষয়ে। একই মৌলের আলাদা ভরবিশিষ্ট সদস্যকে আইসোটোপ বলে। অক্সিজেনের আইসোটোপ বলতে বোঝায় সাধারণ অক্সিজেন পরমাণুর চাইতে ওজন আর আকারে আলাদা একপ্রকার অক্সিজেন পরমাণু। ভরের সামান্য ফারাকের কারণে তাদের মধ্যে বৈশিষ্ট্যের কিছু কিছু পার্থক্য থেকে যায়। সাগরের জলেও অক্সিজেন আইসোটোপের ঘনত্ব সমান নয়। এলাকা অনুযায়ী, জলের প্রকৃতি অনুযায়ী সেটা পাল্টে যায়। ফলে সামুদ্রিক প্রাণীর হাড় বা খোলকের ভেতরেও এই ফারাক বিদ্যমান থাকে।
অর্থাৎ, নির্দিষ্ট সামুদ্রিক অঞ্চলন থেকে পাওয়া মাছ বা অন্যান্য ভোজ্যের মধ্যে একপ্রকার কেমিক্যাল ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা মৌলিক রাসায়নিক চরিত্র থাকে। সেটা কাজে লাগালে বোঝা যেতে পারে কোনও একটা বিশেষ সি-ফুড আসল না নকল। এমনই ব্যাখ্যা দিয়েছেন গবেষণার প্রধান কাণ্ডারি ডক্টর জ্যাসমিন মার্টিনো। উনি অস্ট্রেলিয়ান নিউক্লিয়ার সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি অর্গানাইজেশনে এখন কাজ করছেন।
দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্র বাস্তুতন্ত্র বিশারদ ডক্টর জো ডাবলডে নতুন এই রাসায়নিক কেরামতিকে নিখুঁত সার্টিফিকেট দিচ্ছেন। ওনার মতে, কেমিক্যাল ফিঙ্গারপ্রিন্ট প্রযুক্তিকে ভুল প্রমাণ করা অসম্ভব।
প্রফেসর মার্টিনো ও তাঁর দলের গবেষণায় শুধু ভোক্তারা নন, উপকৃত হবেন জেলেরাও। সামগ্রিকভাবে আরও উন্নত হবে সি-ফুড শিল্পও।