প্রজাতিকে বাঁচানো এক কছপ!

প্রজাতিকে বাঁচানো এক কছপ!

এ যেন আলিপুর চিড়িয়াখানার সেই শতাব্দী প্রাচীন কচ্ছপ অদ্বৈত। চিড়িয়াখানার অদ্বৈত দীর্ঘায়ু হলেও বাবা হতে পারেনি। নিজের দিন পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে সঞ্চারিত করতে পারেনি। শুধু পৃথিবীর নানা পরাবর্তন প্রত্যক্ষ করেছে। এই কাহিনীর অদ্বৈত নিজের বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির অস্তিত্ব রক্ষায় অমর হয়ে গিয়েছে। নতুন অদ্বৈতও গ্যালাপ্যাগোস প্রজাতির কচ্ছপ। সে দায়িত্ব নিয়ে ২ হাজার সন্তানের জন্ম দিয়েছে! যাতে তার প্রজাতির কচ্ছপ বিলুপ্ত না হয়ে যায়! কচ্ছপটির নাম দিয়েগো। দায়িত্ব পালন করার পর গত দু’বছর হল দিয়েগো তার অবসর জীবন কাটাচ্ছে। গ্যালাপ্যাগোস প্রজাতির কচ্ছপের আকৃতি বিশাল। সারা পৃথিবীতে এখন গ্যালাপ্যাগোস জায়েন্ট কচ্ছপের সংখ্যা মেরেকেটে ১৫ হাজার বা তার কিছু বেশি। ইকুয়েডরের গ্যালাপ্যাগোস দ্বীপপুঞ্জের ছোট্ট দ্বীপ এসপ্যানিওলা। সেখানেই এই ধরনের কচ্ছপের বাস। আজ থেকে ৫০ বছর আগেও পৃথিবী থেকে এই কচ্ছপরা হারিয়ে যেতে বসেছিল। তখনই ডাক পড়ে দিয়েগোর।
ইকুয়েডরের এক দ্বীপে ১৯১০-এ জন্ম দিয়েগোর। সেখান থেকে তাকে আনা হয়েছিল আমেরিকার একটি চিড়িয়াখানায়। চল্লিশের দশকের শেষদিকেও ক্যালিফোর্ণিয়ার চিড়িয়াখানায় দিন কাটছিল দিয়েগোর। সত্তরের দশকে একটি সমীক্ষায় দেখা যায় পৃথিবীতে গ্যালাপ্যাগোস কচ্ছপ পড়ে আছে মাত্র ১৫টি। তারপর এই প্রজাতিকে বাঁচানোর উদ্যোগ শুরু হয়। ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে জানা যায় দিয়েগোও ওই হারিয়ে যেতে বসা প্রাণীদের একজন। তাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় সান্টা ক্রুজ আইল্যান্ডে। সেই থেকে শুরু। ২ হাজারের বেশি কচ্ছপের জন্ম দিয়েছে এই দিয়েগো। নিজের প্রজাতিকে বাঁচিয়েছে নিশ্চিত বিলুপ্তির হাত থেকে। বছরের পর বছর ধরে নিরলস ভঙ্গিতে নিজের কর্তব্য পালন করেছে ভিনদেশি এই জীব। হিসেব মতো এখন দিয়েগোর বয়স ১০২ হবে। তার সন্তান-সন্ততিরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে। আর বৃদ্ধ দিয়েগো এখন ইকুয়েডরের জঙ্গলঘেরা দ্বীপে নিশ্চিন্তে কাটছে তার অবসর।