প্রাচীন মায়া সভ্যতাতেও ছিল পারদের দূষণ

প্রাচীন মায়া সভ্যতাতেও ছিল পারদের দূষণ

আধুনিক শিল্পভিত্তিক শহরের দূষণ মোটেই আমাদের আর আশ্চর্য করে না। মার্কারি বা পারদঘটিত দূষণ তার মধ্যে অন্যতম। কিন্তু ল্যাটিন অ্যামেরিকার শতাব্দীপ্রাচীন মায়া (বা ইনকা) নগরের ধ্বংসাবশেষেও খোঁজ মিলল পারদের দূষণের।

মায়া সংস্কৃতিতে বহু প্রাচীনকাল থেকেই স্থাপত্যের কাজে ভারি ধাতু পারদের ব্যবহার ছিল। তখনও স্পেন বা পেরুর দিগ্বিজয়ী রাজারা ঐ সভ্যতায় যুদ্ধ আর রোগের ক্ষয় ধরিয়ে দেয়নি।

ডানকান কুক বলছেন, এখনকার শিল্পনগরিতে পারদের দূষণ আকছার ঘটে। প্রোফেসর কুক অস্ট্রেলিয়ান ক্যাথলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন স্বনামধন্য ভূপ্রত্নবিদ। ইনকা সভ্যতার পরিবেশ নিয়ে নতুন এই গবেষণাপত্রের মুখ্য লেখকও ডানকান কুক।

যে যে অঞ্চলে খনন হয়েছিল এমন দশটা লিপিবদ্ধ তথ্য আমেরিকা আর ইংল্যান্ডের গবেষকরা বেছে ন্যেছিলেন। নেতৃত্ব দিয়েছেন ডানকান কুক। ঐ অঞ্চলগুলোতে পারদের ব্যবহার কতটা কেমন ছিল, সেটাই ওনাদের বিচার্য। মূলত স্থাপত্যের নিদর্শন থেকেই পারদের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হত স্ফটিকাকার মার্কারি সালফাইড। সিনাবার নামে পরিচিত এই রাসায়নিক। এই পদার্থকে গুঁড়ো করে পাথরের বা মাটির শৌখিন দ্রব্যে রঙ করার রেওয়াজ ছিল সে যুগে। এমনকি প্রাসাদ আর মিনারের গায়ে রঙ করলেও বহুল প্রচলিত ছিল সিনাবার।

সিন্সিনাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূপ্রত্নবিদ নিকোলাস ডানিং বলছেন, এই একই গাঢ় লাল রঙকে মায়ার অধিবাসীরা আত্মার শক্তি বলে মনে করত, যা তাদের রক্তেও ছিল। আবার টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক টীম বিচের মতে, ধাতব দূষণের নমুনা যুগে যুগে বিভিন্ন সভ্যতাতেই দেখা যায়। ফ্রন্টিয়ার্স ইন এনভায়রন্মেন্টাল সায়েন্স নামক পত্রিকায় গবেষণাপত্রটা প্রকাশ পেয়েছে সম্প্রতি।