ভাগাড়ের আবর্জনা মুক্তিতে নতুন যন্ত্র উদ্ভাবন

ভাগাড়ের আবর্জনা মুক্তিতে নতুন যন্ত্র উদ্ভাবন

দৈনন্দিন জীবনে আবর্জনা একটি অন্যতম বর্জ্য। সাধারণত আমাদের রাজ্যের ক্ষেত্রে পৌর অঞ্চল গুলিতে আবর্জনা ফেলার স্তুপ বা ভ্যাট আছে। যাকে চলতি কথায় ভাগাড় বলি৷ দৈনন্দিন ব্যবহার্য আবর্জনার প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি ভাগাড়ের স্থান সংকুলান ঘটায় অনেক সময়ই। এবার উত্তর চব্বিশ পরগণার একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্রছাত্রীরা এই আবর্জনা স্তুপের সমাধান সূত্র বের করতে উদ্যোগী হয়েছেন। নারুলা ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজির ইলেকট্রনিকস ও ইন্সট্রুমেন্টেশান বিভাগের ছাত্ররা মূলত একটি মডেল তৈরি করেছেন। এই মডেলে মেন্টর হিসেবে কাজ করেছেন ঐ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যাপক ডঃ বাঁশরি দে মজুমদার।
ফেলে দেওয়া ওয়াশিং মেশিনের ড্রয়ার এবং কলেজের অব্যবহৃত বেঞ্চ দিয়ে তৈরি হয়েছে মডেলটি। এই মডেলটির বিশেষত্ব হলো এই যন্ত্রের সাহায্যে ৪০ কেজি জঞ্জাল কমে হয়ে যাবে ২০ কেজি। ডঃ মজুমদার জানাচ্ছেন, এই মডেলে তিনটি চেম্বার আছে। প্রথম চেম্বার আবর্জনার শুষ্ক ও তরল অংশকে আলাদা করবে। দ্বিতীয় চেম্বারে আবর্জনার মধ্যে থাকা মেটাল বা ধাতব আবর্জনাকে আলাদা করা হবে। তৃতীয় চেম্বারে প্লাস্টিক এবং থার্মকল জাতীয় আবর্জনা পৃথক করে ফেলা হয়। এরপর আবর্জনার যে অংশ মাটিতে মিশতে পারে তাকে ফার্টিলাইজার পেস্ট্রিসাইড দিয়ে মিশিয়ে দেওয়া হয় মাটিতে। কেবল কলকাতা এবং আশেপাশের শহরতলি অঞ্চলে প্রতিদিন প্রায় সাড়ে ৪ হাজার মেট্রিক টন আবর্জনা জমা হয়। বিপুল আবর্জনা জমে তৈরি হয় আবর্জনার পাহাড়। যা পরিবেশ দূষণের অন্যতম কারণ হিসেবে কাজ করে । আবর্জনার স্তুপে জমে থাকে ধাতব পদার্থ, পচনশীল জৈব, প্লাস্টিক, কাচ ইত্যাদি। যাকে সহজেই আলাদা করে দেবে আবিষ্কৃত এই যন্ত্র। আলাদা হওয়ার সুবাদে পচনশীল জৈব বর্জ্য মিশবে মাটিতে। তাতে মাটির উর্বরতাও বাড়বে। কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র জয় হালদার বলেন, যেহেতু নোংরার পরিমাণ কমাতে পারছিনা তাই লক্ষ্য হলো কীভাবে নোংরাকে রিসাইকেল করানো যায়।

মডেলের মেন্টর বলেছেন, স্থানীয় মিউনিসিপালিটি কামারহাটি মিউনিসিপালিটির পৌরপ্রধানের সঙ্গে প্রাথমিক কথা বলা হয়েছে, এবং এই মডেলটি দেখানো হয়েছে। পৌরসভার পক্ষ থেকে আশ্বাসও পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন তিনি। এমনিতে মডেলটির বাণিজ্যিক উৎপাদনের জন্যে খরচ পড়তে পারে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা।